একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে শাহবাজপুর বিদ্যালয়ের পাঠদান
স্বপন কুমার দেব রতন, মৌলভীবাজার : ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে ক্লাস। সহকারী শিক্ষক পদত্যাগ না করেই পাড়ি জমিয়েছেন ইংল্যান্ডে। মোট ১১৫ জন শিক্ষার্থীর এ বিদ্যালয়ে বর্তমান শিক্ষক যোগময় চক্রবর্তী একাই দায়িত্ব পালন করছেন। অফিসের কাজে উপজেলা সদরে কিংবা কোনো ট্রেনিংয়ে গেলে যেতে হয় বিদ্যালয় বন্ধ রেখে। এমন চিত্র মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
শাহবাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক যোগময় চক্রবর্তী বলেন, আমি একাই সব। সব দায়িত্বই আমাকে পালন করতে হচ্ছে। সাবক্লাস্টার ট্রেনিংয়ের কারণে বিদ্যালয় বন্ধ রাখতে হয়। তাছাড়া এক একজনের পক্ষে এক সাথে ৩টি ক্লাস চালানো সম্ভব হয় না। এটা অমানবিক। ক্লাস সামাল দিতে অনেক সময় নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ১৩৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শুধুমাত্র উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নে ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩টিতেই প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। আর সহকারী শিক্ষকের পদ ১০টিই শূন্য। শিক্ষক সংকটের কারণে কোমলমতি শিশুরা পাচ্ছে না কাঙ্খিত শিক্ষা। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা, সেই সাথে কমছে শিক্ষার মান।
অন্যদিকে উপজেলা সদরের আশপাশের অন্য ইউনিয়নের বিদ্যালয়গুলোতে পর্যপ্ত শিক্ষক রয়েছেন। সেখানে অতিরিক্ত শিক্ষক থাকার পরও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বদলি করছে না। উপজেলা সদর থেকে দূরে ও বর্ষায় বেহাল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে অনেক শিক্ষকই এই ইউনিয়নের বিদ্যালয়ে থাকতে চান না।
অন্যদিকে ভিন্নচিত্র উপজেলা সদর ও এর আশপাশের বিদ্যালয়গুলোতে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। তাদেরকে বদলি বা ডেপুটেশনে দিতে চাইলেই শুরু করেন তদবির। তাই কর্তৃপক্ষও ওই ইউনিয়নের বিদ্যালয়গুলো নিয়ে উদাসীন।
ফতেহপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে ছাত্রদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটছে। সবসময় এ ক্লাস ও ক্লাসে দৌড়ঝাঁপ করতে হচ্ছে। পরিকল্পনামতো ছাত্রছাত্রী পড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে শিক্ষার গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে। সম্পাদনা : তারেক