মুমিন: আফগানিস্তানের ইস্পাত কারখানায় কাজ করতে গিয়ে কর্তৃপরে নির্যাতন আর অনাহার-অর্ধাহারে বছরখানেকের বন্দিজীবন কাটিয়ে দেশে ফিরেছেন ২৫ বাংলাদেশি। প্রবাস জীবনের কষ্টের বর্ণনা দিয়ে একটি ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশ করার পরই দেশে ফিরতে সম হন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফাই দুবাইয়ের একটি ফাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ওই ২৫ জন।
বিমানবন্দরে পা রেখেই বুকভরে শ্বাস নেন কুড়িগ্রামের রতন মিয়া : ‘উফ …ভাই…কতদিন পর নিজের দেশের মাটিতে পা রাখলাম। একটু বুক ভরে শ্বাস নিতে পারব। পরিবারের কাছে যেতে পারব। এতদিন তো বন্দি ছিলাম। এখন আমরা স্বাধীন, মুক্ত।’ রতন জানান, গত বছরের ১০ অক্টোবর তারা ২৫ জন আফগানিস্তানের ফোলাড স্টিল মিলে কাজ করতে যান। চুক্তি অনুযায়ী, তাদের মাসে ৫০০ ডলার করে বেতন দেওয়ার কথা ছিল। প্রতিশ্রুতি ছিল ভিসার মেয়াদ শেষ হলে মেয়াদ বাড়াতে সহায়তা করবে কর্তৃপক্ষ। দেশে ফেরা মানিকগঞ্জের নবোগ্রামের রিপন আলী বলেন, ‘দুই মাস ৩০০ ডলার করে দেওয়ার পর মালিক বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ভিসার মেয়াদ পার হয়ে যাওয়ার পর আমাদেরকে কারখানাতেই থাকতে বাধ্য করা হয়। বাইরে বের হওয়ার কোনো উপায় ছিল না। কারখানার বাইরে লোকজন পাহারায় থাকত।
কারখানা মালিকের নির্যাতনের বর্ণনা দেন টাঙ্গাইলের সোহেল রানা : ‘কয়েক মাস খুব বাজে খাবার খেয়ে থাকতে হয়েছে। ছোলা, বুট, নিম্নমানের রুটি খেতে দেওয়া হতো। মালিক না আসায় কারখানা ভালো চলত না। তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফল হয়নি’- এভাবেই নির্যাতনের বর্ণনা দেন সোহেল রানা।
আইওএম বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মোহাম্মদ শাকিল মনসুর জানান, বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিষয়টি পুরো জানার পর তারা সহায়তায় এগিয়ে আসেন। বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে আন্তরিকতা দেখিয়েছে। তারা অত্যন্ত ইতিবাচক অবস্থান নেওয়ায় শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। সম্পাদনা : কালাম আজাদ