খুরশীদ আলম
একটি বিশেষ সংযোজন উল্লেখ করার মতো যে, ঋণ ও সঞ্চয় জমাসহ তহবিলের হিসাবগুলো নতুন সফট্্ওয়্যার তৈরির মাধ্যমে পুরো
কার্যক্রমকে ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। তাছাড়া সঞ্চয় জমার উপর সুদ প্রদান না করে জমার পরিমাণের সমান নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ম্যাচিং ফান্ড প্রদান করা হয়েছে। এটা কোনো টেকসই কার্যক্রম নয়। কেবল এক ধরনের আকর্ষণ সৃষ্টি করার প্রয়াস মাত্র।
প্রকল্প ‘একটি বাড়ি একটি খামার’: বর্তমান পরিস্থিতি
‘একটি বাড়ি একটি খামার‘ প্রকল্পটি ৩০ জুন ২০১৬ তারিখে দ্বিতীয় পর্যায় সমাপ্ত করেছে এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গঠন করে মেয়াদ শেষ হওয়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সকল অর্থ সম্পদসহ দায়দেনা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এর নিকট হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায়ের ডিপিপিও দাখিল করা হয়েছে। বিতর্কটা এখানেই। কারণ প্রকল্প শেষ হয়ে গেছে এবং এর সকল সম্পদ একটি নবগঠিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’কে দেওয়া হচ্ছে। এই পদক্ষেপটাতে ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পটির টেকসই অবস্থানের প্রশ্নটি জড়িয়ে আছে। সর্বোপরি পদক্ষেপটি ২০০১-২০০৬ মেয়াদের মতো প্রকল্প মেয়াদ শেষ হওয়ার পর রেডিমেট তহবিল দিয়ে কোনো একাডেমিক থিসিস এর প্রায়োগিক গবেষণার প্রচেষ্টা কিনা? কিংবা যদি এভাবে বলি যে, প্রকল্পের অভ্যন্তর থেকেই প্রকল্পের উপর আঘাত তাহলে কি ভুল বলা হবে কিনা? গ্রামীণ দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এরকম একটি প্রকল্পের চলমান ও টেকসই অবস্থান বিবেচনায় না এনে প্রকল্পের বিলুপ্তি ঘটিয়ে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান গঠন বিষয়টা অবশ্যই তত্ত্বগতভাবে একটি বিপরীতধর্মী সিদ্ধান্ত। তাছাড়াও দুটি পর্যায়ে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কাজ সমাপ্ত হলেও যে দলগুলো গঠন করা হয়েছে সেগুলো এখনো সমবায় সমিতিতে নিবন্ধন করা হয়নি। এই তথ্যটি পত্রিকার প্রকাশিত প্রতিবেদন মারফত জানা গেছে (প্রথম আলো, ৩ অক্টোবর ২০১৬)। এখানে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের একটি ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
তত্ত্বগতভাবে আমরা জানি, একটি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থাৎ যেকোনো প্রকল্পের একটি মেয়াদ থাকে এবং এই মেয়াদের মধ্যে দেওয়া লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলো অর্জনের জন্য কিছু কার্যক্রম নির্দিষ্ট করা থাকে। প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর প্রাপ্ত ফলাফলকে টেকসই করতে হলে দেশের সকল জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি চলমান কার্যক্রম নেওয়া যেতে পারে।
লেখক: কৃষিবিদ, প্রাক্তন যুগ্ম-পরিচালক, বিআরডিবি
সম্পাদনা: আশিক রহমান