ফেসবুকের দেয়ালজুড়ে…
জয় ইয়াবা বদি বলে আগে বাড়ো!
অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
আইন নাই, বিচার নাই, বললেই হলো? না থাকলে ইয়াবা বদির জামিন হয় কেমনে? জরিমানা মওকুফ, দ-ও রহিত।
সাঁওতালরাই যত নষ্টের গোড়া। শয়তান নাসিরনগরের মালাউনেরা। এরা আইন, বিচার বোঝে না। মানেও না। জয় ইয়াবা বদি বলে আগে বাড়ো।
হামলায় মদদ দেওয়াটা কি দোষ নয়?
ডা. ইমরান এইচ সরকার, মুখপাত্র, গণজাগরণ মঞ্চ
নাসিরনগরে হামলার ঘটনায় আমিরুল নামে স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আক্রান্ত হিন্দু সম্প্রদায় ও পূজা উদ্যাপন পরিষদের নেতারা বলছেন, সেদিন আমিরুল হামলা ঠেকাতে ভূমিকা রেখেছিলেন। আমার প্রশ্ন হলো, হামলা ঠেকানো যদি অপরাধ হয় তাহলে হামলাকারী কারা? যারা হামলা ঠেকানোকে অপরাধ মনে করছেন তারাই নয় কি?
অন্যদিকে সরকার বলছে, এই ঘটনায় তাদের কোনো গাফিলতি ছিল না! তবে সেটা হামলা করায় নাকি হামলা ঠেকানোতে সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। কেননা, সরকার হামলাকারীদের আটক না করে বরং যারা হামলা ঠেকানোতে ভূমিকা রেখেছেন তাদেরই আটক করছেন। এছাড়া সরকারের অনেকে হামলায় মদদদাতাদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলছেন, তাদের কোনো দোষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মানে হামলায় মদদ দেওয়াটা কি দোষ নয়? অবশ্য হামলা ঠেকানো যদি দোষ হয় হামলা করাটা দোষ হয় কি করে?
নাসিরনগরের মতো এমন জঘন্য ঘটনাকে প্রতিপক্ষ দমনের নোংরা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ধারাবাহিকভাবে হামলা চলছে অথচ এখন পর্যন্ত সরকারের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না। হামলা এবং পরবর্তী পরিস্থিতির দায় অবশ্যই সরকারের। যতই ‘উদোর পি-ি বুধোর ঘাড়ে’ চাপানোর চেষ্টা করুন না কেন, আজ না হোক কাল, কাঠগড়ায় আপনাদের দাঁড়াতেই হবে।
এই রাষ্ট্র আমার নয়,অবশ্যই আমার নয়…
মনজুরুল আলম পান্না, সাংবাদিক
আচ্ছা, বাংলাদেশের কোনো মানুষ কি কখনো শরণার্থী হয়েছে? ইতিহাস যে বলে, মুক্তিযুদ্ধে দুই কোটি মানুষ নাকি শরণার্থী হয়েছিল? সে কী করে হয়! তাহলে অন্য আরেক রাষ্ট্রে নির্যাতিত মাত্র কয়েকশো রোহিঙ্গা নামের মানুষকে কেন পুশ ইন করে মৃত্যুর মুখে ফেলে এই দেশ? আচ্ছা ছবিতে ছাতার নিচে থাকা অবসন্ন শিশুটি কি আমার পরী’মা ‘সত্তা’? প্রাণ বাঁচানোর আকুতিতে হাত জোর করা মানুষটি কি মায়ানমারের, সাঁওতাল অথবা আমি?
তাহলে স্রেফ একটা কথা বলি, কথিত দীর্ঘ সংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাসের এই দেশের নাগরিক হয়ে বেঁচে থাকাটা আমার জন্য নিদারুণ লজ্জার। এই রাষ্ট্র আমার নয়, অবশ্যই আমার নয়…
এই রায় বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ…
কল্লোল মোস্তফা, গবেষক ও প্রকৌশলী
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট এর উদ্যোগে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে এক গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর এই গণভোটে মোট ভোট দিয়েছেন, ১০ হাজার ১১১ জন। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপক্ষে অর্থাৎ সুন্দরবনের পক্ষে ভোট পড়েছেÑ ৯ হাজার ১৪৮ জন অর্থাৎ ৯০.৪৮%। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষে ভোট পড়েছে ৮৬০টি অর্থাৎ ৮.৫১%, ভোট বাতিল হয়েছে ১০৩টি অর্থাৎ ১.০১%। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের এই রায় বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মতামতকেই প্রতিফলিত করে। ‘রামপাল চুক্তি ছুঁড়ে ফেল, সুন্দরবন রক্ষা কর।’ ২৪ থেকে ২৬ নভেম্বরের ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি সফল করুন, ২৬ নভেম্বর শহীদ মিনারে সারা দেশ থেকে আসা বিপুল মানুষের সঙ্গে যোগ দিন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আপনার মতামতের বহিঃপ্রকাশ ঘটান, সরকার বাধ্য হবে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করতে।
জগতে এর তুলনা নেই
লুৎফর রহমান হিমেল, সাংবাদিক
প্রবীণ (সত্তরোর্ধ্ব) এবং ছয় বছর বা এর চেয়ে কম বয়সী শিশুদের সঙ্গে বেশি সময় কাটালে আপনি সমৃদ্ধ হবেন। তাদের কথাবার্তা শোনেন, কাজ দেখেন। অনেক কিছুই জানতে পারবেন। এই প্রবীণ এবং এই শিশুর দুজনই অকপট। একজন অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, আরেকজন নির্ভেজাল আনন্দের ভা-ার। এগুলো আমার কথা নয়, মনীষীদের কথা।
আমি নিজেও এটা মেনে চলি। সুযোগ পেলে প্রবীণদের সঙ্গেই অনেকটা সময় কেটে যায়। আমার প্রয়াত নানা যখন ছিলেন, এক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আমার আদর্শ। তিনি কোনোদিন বিদ্যালয়ে যাননি। অথচ তিনি যেসব কথাবার্তা বলতেন, আমি শুধু হা করে শুনতাম। একেকটি বাক্য যেন একেকটা বাণী। আর এখন আমার সকালটা তো যায় আড়াই বছরের প্রিয়নীলের সঙ্গে কথাবার্তা আর খেলাধুলা করেই। ওর মা থাকে তখন স্পর্শের স্কুলে। বাসায় শুধু আমি আর নীল। এই ফাঁকে দুজনে জমে উঠে আড্ডা।
ওর একেকটা কার্যকলাপ দেখে আমি শুধু ভাবি আর ভাবি। কত সরল আর অকপট এক মানবশিশু। ও যখন মিথ্যেটাও বলে, হাসি হাসি মুখ করে, যেন ধরা পড়ার ভয়ও যেন কিছু নয়। অনেক সময় দেখি, নীল কিছু একটা ভেঙে ফেলেছে। সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে এসে ও কাচুমাচু মুখ করে বলবে, ‘বাবা, বাবা, ছোরি! ইৎস ওকে!’ নিজেই ভাঙল, নিজেই আবার এসে ইটস ওকে বলছে! বোঝেন এবার, কত্ত বড় সৎ সাহস। এ অবস্থায় এরপর আর ওই ভাঙা জিনিসের জন্য ওকে ধমকানো যায় না। হেসে ফেলি। ও নিজেও সেই হাসিতে এসে যোগ দেয়। সে এক অনন্য নির্ভেজাল মধুর মুহূর্ত। জগতে এর তুলনা নেই।