কাজী সিরাজ
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে, তখন নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন হবে। নতুন ওই নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার উপরই নির্ভর করবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে। অর্থ্যাৎ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে, নাকি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতোই আরেকটি নির্বাচন হবে, তা নতুন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার উপর নির্ভর করবে। মেরুদ- শক্ত একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হলে ভালো নির্বাচন আশা করা যাবে, সরকারে যারাই থাকুক। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। যদিও এ নিয়ে আলোচনা অনেকদিনই ধরেই হচ্ছে। বিএনপির মতো একটি দলের পক্ষ থেকে যখন সার্চ কমিটি গঠনের একটি প্রস্তাব এসেছে তা নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ ও সংগঠন অংশগ্রহণ করবে। অর্থ্যাৎ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে তা আলোচনা হবে। বুদ্ধিজীবী মহলেও আলোচনা হবে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মতামত আসতে শুরু করবে এবং এখান থেকে সরকারও একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পাবে।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক তা তিনি চান না। তার মানে হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন সবার অংশগ্রহণ ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হোক। সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার একটা শর্ত হচ্ছে, ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে, সেটি কেমন হচ্ছে। মোটামুটিভাবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় কিনা দেখার বিষয়।
বেগম খালেদা জিয়া তার প্রস্তাবে সার্চ কমিটি গঠনের কথা বলেছেন, তার বিরোধীতা কিন্তু তিনি করেননি। বেগম জিয়া প্রথমে বলেছেন, আগে সার্চ কমিটি হবে, সেখানে ৫-১০ জনের নাম প্রস্তাব করা হবে। তারপর ১০ জন থেকে ৫ জনকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি গ্রহণ করবেন। তারা আবার নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। প্রথমত, সার্চ কমিটি কোনো সাংবিধানিক কমিটি নয়। সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটির কোনো অস্তিত্ব নেই।
ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে, কাদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য সার্চ কমিটি করা হবে। কার বা কাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। বেগম খালেদা জিয়া যে প্রস্তাবটি দিয়েছেন, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল অথবা বাংলাদেশের সূচনা থেকে এ পর্যন্ত যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। বেগম জিয়া অত্যন্ত কৌশলে জামায়াতে ইসলামীকেও আলোচনায় রাখার প্রস্তাব করেছেন। অর্থাৎ জামায়াতের সঙ্গ তিনি ছাড়ছেন না।
পরিচিতি: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান