লুৎফর রহমান হিমেল
কলেজ লাইফেও ‘ভেনাস’ ‘ইউনিভার্সিটি’ এ রকম নামের কয়েকটি ডায়েরি খাতা ছিল। সেগুলো শুধু ব্যবহার করতাম রেডিওতে শোনা বাংলা চলচ্চিত্রের গানসহ অন্যান্য গানের তালিকা করার জন্য। রুল টানা সেই খাতায় উপর-নিচে লম্বালম্বি তিনটি কলাম টেনে প্রথম সারিতে সিনেমার নাম, দ্বিতীয় সারিতে গানের প্রথম কলি, তৃতীয়টিতে শিল্পীর নাম লিখতাম। এ রকম কমপক্ষে তিনটি খাতায় এসব তথ্য দিয়ে পূর্ণ ছিল। নানা সঙ্গীতানুষ্ঠানে প্রচুর চিঠি লিখতাম। লাক্স সঙ্গীতমালাসহ আরও কত যে অনুষ্ঠানে কুইজে অংশ নিতাম, ওই সময়ের কত যে শ্রোতার নাম মনে গেঁথে আছে এখনো… তার হিসাব নেই। তখন যেকোনো অনুরোধের আসর বা সঙ্গীত কুইজে ‘নাটিয়া পাড়া থেকে তানজিনা পিয়াস রেখা’ নামটি কমন থাকতই। এ রকম অনেক নাম এখনো মনে আছে। কিন্তু তাদের দেখিনি এ জীবনে।
রেডিওতে গান ও নাটক শোনার ভীষণ নেশা ছিল আমার। শুক্রবার বেলা ৩টা ৫ মিনিটে, সোমবার দুপুর ২.৩০ এবং বুধবার রাত দশটার নাটকের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতাম। আমার মনোজগত গঠনে বড় প্রভাব রেখেছে এই রেডিও।
এখন প্রায় প্রতিরাতে টিভিতে মুভি দেখি; কিন্তু আমার রেডিওর সেই রোমাঞ্চ আর পাই না। আমি জানি না রেডিও টিভির চেয়েও শক্তিশালী কিনা, কিন্তু আমার জীবনে রেডিওই সেরা। হয়তো বা টিভি সিনেমার দৃশ্যগুলো সাজানোই থাকে; রেডিওর নাট্যদৃশ্যগুলো আমি নিজেই কল্পনা করে নিতে পারতাম, এখানেই হয়তো পার্থক্যটা।
লেখক: সাংবাদিক
ফেসবুক থেকে