ফেসবুকের দেয়ালজুড়ে …
শুধু নির্বাচনি মাঠে দিনরাত পরিশ্রম …
আশরাফুল আলম খোকন, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেসসচিব
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের অপরাজনীতির ‘বলি’ এইবার কে হবেন তা হয়তো জাতি অচিরেই জেনে যাবেন। গত নির্বাচনে বলি হয়েছিলেন তৈমুর আলম খন্দকার। নির্বাচন শুরুর মাত্র ৭ ঘণ্টা আগে তাকে নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য করেছিলেন ম্যাডাম জিয়া। এই কষ্টের কথা তৈমুর প্রায়ই প্রকাশ্যে বলেন। সর্বশেষ, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় দুপুর বেলা তাদের প্রার্থীদেরকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। অপরাজনীতির বলি কেন বললাম সেই কথায় আসি।
প্রথমত, জামায়াত-বিএনপি জোট শুরু থেকেই বলে আসছে এই নির্বাচন কমিশন তারা মানে না। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশনের অধীনেই তারা স্থানীয় সরকারসহ সব নির্বাচনেই যাচ্ছে। আবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদ নির্বাচনে কিন্তু তারা অংশ নিচ্ছে না। তারা জানে, জেলা পরিষদ নির্বাচন দিয়ে রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করা যাবে না, কারণ সেখানে ভোটার হচ্ছেন স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। ইস্যু তৈরি করতে হলে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়াই উত্তম, পরে সময় সুযোগ বুঝে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। বিষয় হচ্ছে, যেই বেচারা জামায়াত-বিএনপি জোট থেকে প্রার্থী মনোনয়ন পাবেন সেই বেচারার বারোটা বাজা। শুধু নির্বাচনি মাঠে দিনরাত পরিশ্রম ও পয়সা খরচ।
এই দুই তরফই রেইসিস্ট বা বর্ণবাদী
পিনাকি ভট্টাচার্য, চিকিৎসক ও কলামিস্ট
সেক্যুলারদের একাংশ প্রাণপাত করে দিচ্ছে এটা প্রমাণ করতে যে, রোহিঙ্গাদের মাইর দেওয়া জায়েজ আছে, কারণ এরা বদ, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, এরা পুলিশ মারছে, এরা চোরাচালান করে, এরা ইয়াবা ব্যবসা করে। ইসলামপন্থিদের একাংশ প্রচার করতেছে, বৌদ্ধরা বদ।
এই দুই তরফই রেইসিস্ট বা বর্ণবাদী। সেক্যুলারদের কাছে আমার কোনো প্রত্যাশা নেই। এরা পচে এখন গন্ধ ছড়াচ্ছে। কিন্তু ইসলামপন্থিরা কেন সেক্যুলারদের বর্ণবাদী ভাষায় কথা বলে? কোনো ধর্ম, ভাষা, জাতি, গাত্রবর্ণ বা সংস্কৃতির সব মানুষ খারাপ এই ধারণা ধারণ করাকে বলে বর্ণবাদ। বর্ণবাদ দিয়ে পৃথিবীর কাছে নিজের লড়াইয়ের ন্যায্যতা প্রমাণ করতে পারবেন না। আপনার লড়াই পথ হারাবে।
মায়ানমার রাষ্ট্রকে ধরুন, তার দিকে আঙুল তুলুন। মায়ানমার রাষ্ট্রের কর্তৃত্ববাদী শাসনকে দায়ী করুন। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপরে রাষ্ট্রীয় গণহত্যা চলছে, ঢালাও মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে, এই দিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করুন। সম্ভব হলে ইংরেজিতে। এইটা না পারলে চুপ করে বসে থাকুন, কিন্তু রেইসিস্ট বয়ানে ফেসবুক ভরিয়ে তুলেন না।
এই বিভ্রান্তিকর চর্চা ব্যাপক ভ-ামিসুলভও বটে
অমি রহমান পিয়াল, সাংবাদিক
একচোখা মানবতাবাদ বরাবরই সন্দেহজনক উপলব্ধি! এই বিভ্রান্তিকর চর্চা ব্যাপক ভ-ামিসুলভও বটে। কক্সবাজার তিনদিন রাস্তায় ঘোরাঘুরি করেন, রোহিঙ্গা চিনবেন। দুইদিন রাঙামাটি থাকেন মানবতা শব্দটার মানে বুঝবেন। তারপর না হয় আপনার মানবতাবিষয়ক বয়ানবাজি আমরা সাবাশি দিব…
সেটি নিজের কাছে ভুল প্রমাণিত হয়েছে
মনজুরুল আলম পান্না, সাংবাদিক
জন্মের পর থেকে আমার এতদিনের ধারণা ছিল, পৃথিবীর বুকে পাকিস্তান হলো সবচেয়ে অসভ্য এবং বর্বর একটি রাষ্ট্র। সেটি নিজের কাছে ভুল প্রমাণিত হয়েছে। পাকিস্তানের চেয়ে বর্বরতম এক আদিম রাষ্ট্রের নাম মায়ানমার। নিজ দেশে মুখোশের আড়ালে এক শ্রেণির কথিত রাজনীতিবিদকে যতটা কুৎসিত বলে জানতাম, দেখি তার চেয়ে হাজারো গুন কুৎসিত, মানবতার লেবাসধারী গণতন্ত্রপন্থি এক নেতা রয়েছে পাশেই। তার নাম অং সান সু চি।
আজ আমার বাড়ি যদি ভারতে কিংবা মায়ানমারে হতো…
শেখ আদনান ফাহাদ, সহকারী অধ্যাপক, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, জাবি
আমাদের পূর্ব-পুরুষদের অর্থনৈতিক মুক্তির পথ খুলে দিতে ব্রিটিশ আমলে বাস্তবতার নিরিখে প্রথমবারের মতো বিশাল বাংলা দুই ভাগ করা হয়েছিল। জমিদারি চলে যাবে, ইনকাম কমে যাবে এই আশঙ্কায় পশ্চিমবঙ্গের এলিটরা, বিশেষ করে জমিদার শ্রেণি কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জন দেওয়া শুরু করলে তাদের দাবি মেনে ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়। তারপর আরও অনেক ঘটনা, দুর্ঘটনা। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসেরা আমাদের শেরে বাংলা আর হোসেন শহীদ সাহেবের সঙ্গে মিলে চেষ্টা করেছিলেন বাঙালি হিন্দু-মুসলমানসহ সব ধর্মের মানুষের জন্য আলাদা রাষ্ট্র। ভারত এবং পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত রাষ্ট্র পাইনি। বাঙালি বলে, পাকিস্তানিরা আমাদের হিন্দু মনে করত। আর ইসলাম ধর্মের অনুসারী বলে, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা আমাদের বাঙালি বলে স্বীকৃতি দিতে চাইত না। আমাদের পাকিস্তান রাষ্ট্রেও আমরা নিরাপদ রইলাম না।
১৯৭১ এর গণহত্যা, মুক্তি সংগ্রাম পেরিয়ে আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। একজন বাঙালি মুসলমান হিসেবে আমাকে একটা নিরাপদ রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে আমি, আমার পরিবার আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারব না। আজ আমার বাড়ি যদি ভারতে কিংবা মায়ানমারে হতো অথবা আজও যদি পাকিস্তানের অংশ থাকতাম আমরা, তাহলে কী পরিমাণ সাম্প্রদায়িকতা আর নির্যাতনের ভিতর দিয়ে যাওয়া লাগত, ভাবলেই গা শিউরে উঠে। আমাকে নিরাপদ সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, রাত উপহার দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু এবং তার সকল সহচর, মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারতীয় সামরিকবাহিনীর সদস্য, সকলের কাছে এই প্রাতঃকালীন কৃতজ্ঞতা।