জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীর চাপে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী হলেই বহিষ্কার
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মতো ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনেও প্রার্থীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি জেলায় ৫ জনের বেশি প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। কোথাও কোথাও ১০ জনও রয়েছেন। এরমধ্যে অনেকেরই মনোভাব দল থেকে মনোনয়ন না পেলে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন।
এদিকে জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আবেদন নিয়ে বিপাকে পড়েছে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ড। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সমর্থন পেতে ৬১ জেলা থেকে ৭শ আবেদন পড়েছে। কোনো কোনো জেলা থেকে ২০ থেকে ৩০টির মতো আবেদন পড়েছে। চেয়ারম্যান পদের পাশাপাশি সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য পদে নির্বাচনে আগ্রহীদেরও বায়োডাটা চেয়েছে দলটি।
এ নির্বাচনে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহ না থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। দলটির পক্ষ থেকে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্যÑ এ তিনটি পদেই একক প্রার্থী সমর্থন দিতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে।
আওয়ামী লীগ দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, আবেদনগুলো যাচাই বাছাই শুরু করেছে দল। উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের মতোই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অ্যবহত রয়েছে। তাই একক প্রার্থী নির্ধারণ করতে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তৃণমূল থেকে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেছে।
মনোনয়ন বোর্ডের একজন সদস্য জানান, আবেদনগুলো যাচাই বাছাই চলছে। দলের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে প্রার্থীদের বিষয়ে জরিপ পরিচালনা হচ্ছে। এসব জরিপে যারা এগিয়ে থাকবে এবং দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যারা কাজ করেছেন তাদেরই মনোনয়ন দেওয়া হবে। এরমধ্যে এক দফা চেয়ারম্যান পদে প্রাপ্ত আবেদনপত্র প্রাথমিকভাবে যাচাই বাছাই হয়েছে। এরপর আগামী ২৪ নভেম্বরর তৃণমূলের জরিপ রিপোর্ট পাওয়ার পর আরও অন্তত দুটি বৈঠকের পর চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে।
দলের রাজশাহীয় বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অবশ্যই জেলা পরিষদে একক প্রার্থী দেওয়া হবে। তবে এরমধ্যে যদি কেউ দলীয় শৃঙ্খলা না মেনে বিদ্রোহী প্রার্থী হন তাহলে তো দল অবশ্যই কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের তারিখ ধার্য করেছে নির্বাচন কমিশন। গত রবিবার ৬১টি জেলা পরিষদের তফসিলও ঘোষণা করেছে কমিশন। এ নির্বাচনে প্রার্থীরা ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ৩ ও ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১১ ডিসেম্বর এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১২ ডিসেম্বর।
পরোক্ষ ভোটের মাধ্যমে প্রতিটি জেলা পরিষদে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও পাঁচজন নারী (সংরক্ষিত আসন) সদস্য নির্বাচিত হবেন। আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জেলা পরিষদের ভোটার হবেন। এ হিসেবে স্থানীয় সরকারের চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬৫ হাজার নির্বাচিত প্রতিনিধি নির্বাচকম-লীর সদস্য হিসেবে এ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদে। সম্পাদনা: আলাউদ্দিন