খেলাফত হোসেন খসরু, পিরোজপুর : মঠবাড়িয়া উপজেলায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে সহাস্রাধিক আবাদী জমিতে আমন আবাদ না হওয়ায় ভুক্তভোগী কয়েক হাজার কৃষক পরিবারে নীরব কান্না চলছে। ইরি-বোরো ধান চাষের জন্য জলাবদ্ধ জমিতে জন্ম নেয়া কচুরি পানা ও আগাছা পরিস্কার করতে কৃষকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জানা যায়, বেড়িবাঁধ না থাকা এবং অপরিকল্পিতভাবে বেড়িবাঁধ, শাখা খালে বাঁধ ও ¯ুইজগেট নির্মাণের কারণে উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নে প্রতিবছর সহাস্রাধিক আবাদী জমি জলাবদ্ধ থাকায় কৃষকরা আমন আবাদ করতে পারছে না। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার মিরুখালী ও ধানী সাফা ইউনিয়নের ১২ টি গ্রাম। গ্রাম সমূহ হলো মিরুখালী ইউনিয়নের ছোট শৌলা, বড় শৌলা, উত্তর মিরুখালী, ওয়াহেদাবাদ, দেবীপুর, বাঁশবুনিয়া, পশ্চিম মিরুখালী, বাদুরা, ভগিরথপুর ও ঘোপখালী এবং ধানী সাফা ইউনিয়নের পূর্ব ধানী সাফা ও তেতুলবাড়িয়া। উপজেলা কৃষি আফিসের সূত্র মতে উপজেলায় মোট অনাবাদী জমির পরিমাণ এক হাজার একর। তবে কৃষকদের দাবী মিরুখালী ও ধানী সাফা ইউনিয়নেই অনবাদী জমি আছে প্রায় এক হাজার একর। আমুয়া-মিরুখালী-ধানী সফা খালের উত্তর পারে বেরি বাঁধ না থাকা এবং কয়েকটি শাখা খালে বাঁধ দেয়ার কারণে পানি নিষ্কাশন না হতে পারা এই ২ ইউনিয়নের জলাবদ্ধাতার কারণ। সরেজমিনে দেখা গেছে, আমন আবাদ না করতে পেরে ইরি-বোরো চাষের জন্য জলাবদ্ধ জমির আগাছা পরিষ্কার করতে মোটা অংকের টাকা ব্যয় হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। ঘোপখালী গ্রামের মোবারক আলী তালুকদারের(৮৫) নাতী মো. বোরহান তালুকদার জানান, তাদের প্রায় ১৪ একর জমিতে আমন আবাদ হয়নি। একই গ্রামের বাবুল তালুকদার(৪৫) ও আনেচ তালুকদার(৫৫) এর প্রায় ৬ একর জমি অনাবাদী আছে। বড় শৌলা গ্রামে জমির কচুরি পানা ও আগাছা পরিস্কার রত মো. ইউনুচ তালুকদার(৫০) জানান, আগাছা পরিষ্কার করতে একর প্রতি প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যায় হয়। একই গ্রামের আ. সোবাহান হাওলাদার জানান, ইরি-বোরো ধান আবাদের জন্য আগাছা সাফ এবং জমি চাষে একর প্রতি প্রায় ১৭/১৮ হাজার টাকা ব্যয় হবে। একরে ২০ হাজার টাকার ধান ঘরে আসবে না। তাই অধিকাংশ কৃষক ইরি-বোরো আবাদ করবে না বলে তিনি জানান।
খুলনা মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও বিশিষ্ট আইনজীবী ড. মো. জাকির হোসেন জলাবদ্ধতা নিরসনে মিরুখালী বাজার থেকে ধানী সাফা বাজার পর্যন্ত খালের উত্তর পারে (৮ কিলোমিটার) বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং মিরুখালী-ঘোপখালী খাল, ধোপার খাল, ডাক্তার বাড়ি খাল, তেুল বাড়িয়ার খাল, দেবীপুর খাল, ভগিরথপুর বাজার খাল ও তোফেল হাওলাদার বাড়ির সামনের খালে দ্রুত স্লুইজ গেট নির্মাণের দাবি জানান।