নাৎসি স্যালুটে ট্রাম্পের বিজয় উদযাপন ওয়াশিংটনে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নাৎসি স্যালুটে ওয়াশিংটনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় উদযাপন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নব্য নাৎসীবাদীরা। দেশটির শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামী ‘অল রাইট’ গ্রুপের কাছ থেকে এমন স্যালুট পেয়েছেন তিনি। নব্য নাৎসীবাদী এ গ্রুপটি শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য ছাড়াও ইসলামভীতির প্রসার এবং নারীবাদের বিরোধিতায় সরব। অ্যাডলফ হিটলারকে ‘হেইল হিটলার’ বলে অভিবাদন জানাতো সমর্থকরা। ১৯ নভেম্বর ২০১৬ শনিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের বিজয়োৎসব পালনকালে যেন উঠে এলো এমনই এক চিত্র। অনুষ্ঠানে এক বক্তা ‘হেইল ট্রাম্প’ বলে জোরালো আওয়াজ দেন। প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, অল রাইট মুভমেন্টের একজন নেতা রিচার্ড স্পেন্সার একটি সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন। এতে তিনি বলেন, আমেরিকা শ্বেতাঙ্গদের জন্য। এ সময় তিনি শ্বেতাঙ্গদের ‘সূর্যসন্তান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। এ সময় তিনি যারা কখনও গ্রহ-উপগ্রহে পদচারণা করেনি তাদের সবচেয়ে ঘৃণ্য জীব হিসেবে আখ্যায়িত করেন। বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান
নাৎসি স্যালুটের আদলে উপস্থিত কিছু দর্শক তাদের বাহু প্রসারিত করলে রিচার্ড স্পেন্সার চিৎকার করে বলেন, ‘হেইল ট্রাম্প, হেইল আওয়ার পিপল, হেইল ভিক্টরি!’
তবে গ্রুপটির এমন স্যালুট প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। যদিও নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের নব্য নাৎসিবাদীদের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি। ট্রাম্পের পেছনে একযোগে কাজ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামী গ্রুপগুলো। নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাদের নিন্দা জানাই। এটা আমি অস্বীকার করছি এবং এর নিন্দা করছি।’ অল রাইট গ্রুপকে সক্রিয় করার কোনও ইচ্ছা তার নেই বলেও জানান ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মধ্যে একটি ডানপন্থী মিডিয়া গ্রুপের প্রধান স্টিভ ব্যানন-এর মতো ব্যক্তিরাও রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রধান কৌশলগত উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পেয়েছেন। স্টিভ ব্যানন-এর ওয়েবসাইট ব্রেইবার্ট-এ প্রকাশ্যেই বর্ণবাদী, যৌন বিষয়ক এবং অ্যান্টি সেমিটিক লেখা প্রকাশিত হয়। এসব লেখা পড়তেই লোকজন তার সাইটে প্রবেশ করেন। তার ওয়েবসাইটের বিরুদ্ধে শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সঙ্গেও সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ট্রাম্প বলেন, ব্রেইবার্ট একটি প্রকাশনা মাত্র। তারা আপনাদের মতোই বিভিন্ন সংবাদ কাভার করে থাকে। আমার যদি মনে হয় যে, তিনি একজন বর্ণবাদী ছিলেন অথবা অল রাইট সমর্থক তাহলে আমার প্রশাসনে তার নিয়োগের বিষয়ে চিন্তাভাবনারও অবকাশ থাকবে না।’ এদিকে মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেল মেরকেল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ট্রাম্পের জয় শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যকামীদের জন্য ত্রাণকর্তার মতো আবির্ভূত হতে পারে। ‘হেইল ট্রাম্প’ ভিডিওকে ‘বিভৎস ও ভয়ঙ্কর’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ