বাংলাদেশ-ভারতের ৯টি সমঝোতার অগ্রগতি নেই ভারতের আগ্রহ রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে
হাসান আরিফ ও শারমিন আজাদ: ভারত বাংলাদেশের মধ্যে যেসব সমঝোতা রয়েছে তার সব কিছু পেছনে ফেলে এখন রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের প্রতিই বেশি আগ্রহ ভারতের। তাই এই প্রকল্পের অংশীদার হওয়ার জন্য সব ভাবেই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে দেশটি। এতে বাংলাদেশেরও ইতিবাচক মনোভাব রয়েছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প নিয়ে ভারত-রাশিয়া ও বাংলাদেশের ট্রাইল্যাটেলার সমঝোতা চুক্তি নিয়ে বৈঠক হয়েছে মস্কোতে। গত ২১ নভেম্বর তিন দেশের মধ্যে এ বিষয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, এই বৈঠক হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা চুক্তিগুলোর অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন। তাই এবিষয়ে একটি প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঢাকা ও পুনের ডিফেন্স ইনস্টিটিউটের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সমঝোতার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ড্রাফট পাঠানো হয়েছে ভারতে।
এতে আরও রয়েছে, ভারতের গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স ও খুলনা শিপবিল্ডার্স এর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সমঝোতা। এতে ভারতের পক্ষ থেকে ড্রাফট শেয়ার করা হয়েছে। ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ও খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের সমঝোতাও রয়েছে আলোচনায়। এতেও ভারতের তরফ থেকে ড্রাফট পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশে। ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ড্রাই ডক লিমিটেডের মধ্যের সমঝোতা চুক্তিও সম্মতি পেয়েছে, বাকি আছে স্বাক্ষরের। ভারতের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সমঝোতার একটি চুক্তিও এখন রয়েছে কেবল স্বাক্ষরের অপেক্ষায়।
ভারতে পণ্য যাওয়া ও আসার জন্য চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দর ব্যবহারের সমঝোতা নিয়ে বাংলাদেশের দিক থেকে তথ্য পাঠানো হয়েছে। অপেক্ষায় আছে ভারতের মতামতের।
সাগরে অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে এবং ভারতীয় কোস্ট গার্ড ও বাংলাদেশের কোস্ট গার্ডের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর সমঝোতা স্বাক্ষরের জন্যও তথ্য আদান প্রদান করেছে দুই দেশ। তবে এ বিষয়ে এ বছরের ৬ নভেম্বর তথ্য আদান প্রদান হলেও এখনো চুক্তি সইয়ে কোনো অগ্রগতি নেই। দুই দেশের নেভির মধ্যে হোয়াইট শিপিং তথ্য আদান প্রদানে যে টেকনিক্যাল এগ্রিমেন্ট হওয়ার কথা তাতেও বাংলাদেশ তথ্য পাঠিয়েছে ২০১৫ সালেই। এখনো এর আর কোনো অগ্রগতি নেই। জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে সহযোগিতা বাড়াতে দুই দেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা তা-ও ঝুলে আছে। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের ডিফেন্স সার্ভিস স্টাফ কলেজ, ওয়েলিংটন এবং ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজের মধ্যে হতে যাওয়া সমঝোতা স্মারকটিও এখনো সইয়ের অপেক্ষায়। এ বিষয়ে ভারতীয় তথ্য বা ড্রাফট পাঠানো হয়েছে বাংলাদেশে।
বাংলাদেশের তথ্য পাঠানোর অপেক্ষায় আটকে আছে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব লাইটহাউজেস এন্ড লাইটশিপ এবং বাংলাদেশের ডিরেক্টর অব শিপিং এর মধ্যে চুক্তিটি।