শামীম-আইভী দ্বন্দ্বের সমাধান না হলে এনসিসি নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা
নুরুল আজিজ চৌধুরী ও হাবিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নগরজুড়ে আনন্দের বন্যা বইতে থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের ঐক্য সংকট ও হ-য-ব-র-ল কর্মকা-ে বিষাদের ছায়া ফুটে উঠেছে। তৃণমূলের নেতাকর্মী ও ভোটাররা সিদ্ধান্তহীনতায় পড়েছেন। শীর্ষ নেতাদের একাট্টা মনোভাব প্রকাশ দলের সিনিয়র ও প্রয়াত নেতাদের নিয়ে অভিযুক্তমূলক মন্তব্য করায় আবারো প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সম্প্রীতি ঐক্যের মধ্যে ফাটল ধরেছে। এমনকি নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ মর্মাহত হয়েছেন। ফলে বিএনপি এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে নগরের পুরো নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
এর সন্তোষজনক সমাধান না হলে এনসিসি নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সাংসদ এ কে এম শামীম ওসমান ও নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এক সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তার এই নির্দেশের পরও গত রবিবার নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে আওয়ামী লীগের এমপি এ কে এম শামীম ওসমানের বাবা সাবেক এমপি প্রয়াত এ কে এম শামসুজ্জোহাকে জড়িয়ে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী আপত্তিকর মন্তব্য করেন।
একেএম শামীম ওসমান এর প্রতিবাদে দল থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি তার এ সিদ্ধান্তের কথা এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছেন। তবে ক্ষুব্ধ শামীম ওসমানকে আপাতত ওবায়দুল কাদের শান্ত করেছেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ফিরলে তাকে এ বিষয়ে অবহিত করা হবে।
এ নিয়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ঘরানার রাজনীতিতে বিশ্বাসীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে দেখা গেছে।
আইভীর এমন মন্তব্যে মহানগর মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম বলেন, তার দলের প্রতি ভালবাসা নেই। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকে ব্যবহার করার জন্যই তারা দলকে ব্যবহার করছে। যারা অন্য দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গ দিতে চায় আর মনে করে নিজ দলের মানুষ, সাথে থাকলে ক্ষতি হতে পারে তারাই এমন মন্তব্য করতে পারে। এতে করে দলের প্রতি তাদের কতটুকু দরদ তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শামীম ওসমান গণমাধ্যমের কাছে কিছুই বলতে চাননি। তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের কয়েকজন জানিয়েছেন, শামীম ওসমান তার বাবা সাবেক এমপি প্রয়াত এ কে এম শামসুজ্জোহাকে নিয়ে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর অশোভন বক্তব্যের বিষয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তিনি বৈঠকে বলেছেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এ কে এম শামসুজ্জোহা একজন সৎ মানুষ ছিলেন। আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এ সদস্যের রাজনৈতিক দক্ষতা ও যোগ্যতা ছিল প্রশ্নাতীত। নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে তার কোনো ধরনের দুর্নাম ছিল না। অথচ তাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করেছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু