নাসিক নির্বাচন : আইভীর জন্যেও অগ্নিপরীক্ষা
নুরুল আজিজ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শুধু শামীম ওসমানই নয়, অগ্নিপরীক্ষায় আছেন সেলিনা হায়াত আইভীও। বিগত নির্বাচনে বিনা চ্যালেঞ্জেই প্রায় আইভী জিতেছিলেন। কিন্তু এবার তিনি কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছেন।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে (এনসিসি) আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী এবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন। বিগত ২০১২ সালের মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে নাগরিক কমিটির ব্যানারে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থী শামীম ওসমানকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে সারাদেশে আলোচিত হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে বিএনপি প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার ভোটযুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
এনসিসির গত নির্বাচনের ফলাফল দেখে অনেকেই বলেছিলেন আইভীর ইমেজ ও কারিশমায় এই বিজয় অর্জন হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, কুমিল্লা ও গাজীপুরে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট প্রার্থীরা যখন বিএনপির প্রার্থীদের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হলেন তখন পর্যবেক্ষকরা বললেন নারায়ণগঞ্জের পরাজয়ও শামীম ওসমানের পরাজয় ছিল না। ছিল আওয়ামী লীগের পরাজয়।
ওই সময় নানা বিতর্কে সরকারবিরোধী জনমত ছিল বিএনপির অনুকূলে। তাই বিএনপি বিজয় ঘরে তুলেছিল একের পর এক। তখন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শামীম ওসমানকে তাদের নিজস্ব সমর্থক ও আওয়ামী লীগের হার্ডলাইনের ভোটাররা ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের একাংশ, বামপন্থী ও সাংস্কৃতিক জোটের কর্মীরা ছিলেন আইভীর পক্ষে। শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে সব শক্তি ভোটযুদ্ধে আইভীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।
সেলিনা হায়াৎ আইভী এবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী। দলের একাংশ তার সঙ্গে থাকলেও বিগত নির্বাচনের মতো বাড়তি সুবিধা কতটা পাবেন এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা শামীম ওসমান-আইভীকে মিলমিশ করিয়ে দিলেও নারায়ণগঞ্জে গিয়ে দুজনই যার যার মতো অবস্থানে। মনোনয়ন জমাদানের সময় আইভী শামীম ওসমানকে ডাকেননি।
এদিকে, বিএনপি এবার দলের হার্ডকোরের কোনো নেতাকে মনোনয়ন দেয়নি। মনোনয়ন দিয়েছে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেনকে। সাখাওয়াত হোসেনের ক্লিন ইমেজ রয়েছে। আওয়ামী লীগের একাংশসহ এবার বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে নামতে পারেন। বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে সেলিনা হায়াৎ আইভী সুবিধা ভোগ করেছিলেন, এবার আওয়ামী লীগ প্রার্থী হওয়ায় অসুবিধা ভোগ করবেন এমনটাই মনে করেন পর্যবেক্ষকরা। তাছাড়া, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনি প্রচারণায় নামলে দলের ঘুমন্ত নেতাকর্মীরা জেগে উঠতে পারেন।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, শেষ হাসি কে হাসবেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বিগত নির্বাচনে বিনা চ্যালেঞ্জেই প্রায় আইভী জিতেছিলেন। এবার তিনি চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছেন। এই নির্বাচন আইভীর জন্য অগ্নিপরীক্ষা। সম্পাদনা: আনোয়ার