বিপিএলে কুমিল্লার হ্যাটট্রিক জয়
এল আর বাদল : মাশরাফির তুলনা শুধু মাশরাফি নিজেই। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়া এই ক্রিকেটার বিপিএলের চলতি আসরে প্রথম দিকে নিজেকে চেনাতে না পারলেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে জেতাতে কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু দলটির ভাগ্যের দরজাটা খুলতে সময় লেগে যায়। এমন সময় ভাগ্যের দরজা খুললো যে, এখন আর বিপিএলের শিরোপা দৌঁড়ে সামিল হওয়া সম্ভব নয়। এখন যেনো জয়রথ ছুটছে কুমিল্লার। চট্ট্রগাম পর্বে একমাত্র জয় নিয়ে ঢাকায় ফিরে এসে টানা টানা তিন ম্যাচ জিতলো মাশরাফির কুমিল্লা। বলা যায়, ব্যাটে বলে কুমিল্লার জয়ের নায়ক মাশরাফি বিন মোর্তুজাই।
গতকাল শুক্রবার মিরপুর স্টেডিয়ামে বিপিএলে প্রথম ম্যাচে খুলনা টাইটানসকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এটি নিয়ে মিরপুর মাঠে কুমিল্লার টানা তৃতীয় জয়। খুলনার ১৪১ রান তাড়ায় কুমিল্লা জিতে যায় ৮ বল বাকি থাকতেই। ছোট্ট রান আপে মাত্র কয়েক পদক্ষেপে বোলিং করেও ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। এরপর খেলেছেন ১১ বলে ২০ রানের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ইনিংস। রান বলের টানাপোড়েনে থাকা কুমিল্লা এগিয়ে যায় সেখানেই। এরপর ৫৭ বলে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংসে দলকে এগিয়ে নিয়েছেন মারলন স্যামুয়েলস। গুরুত্বপূর্ণ একটি অপরাজিত ইনিংসে নিজেকে ফিরে পাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন লিটন দাসও। প্রথম আট ম্যাচের মাত্র একটিতে জয়ী কুমিল্লা জিতল টানা তিন ম্যাচ। একটু হলেও টিকিয়ে রাখল শেষ চারের আশা। রান তাড়ায় কুমিল্লা প্রথম ওভারেই খেয়েছিল জোর ধাক্কা। টানা চার ম্যাচে রান পাওয়া আহমেদ শেহজাদ ফিরে যান প্রথম ওভারেই। এদিন খুলনা ব্যাটিংয়ে নেমেছিল টস হেরে। ব্যাটিং নিয়ে ধুঁকতে থাকা দল এদিন আবার একাদশে ফেরায় হাসানুজ্জামানকে। এই ওপেনার রান পেয়েছেন কিছু, তবে আরেক প্রান্তে অবস্থা ছিল আগে মতোই। মোহাম্মদ শরীফকে সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড রিকি ওয়েসেলস।
একাদশে ফেরা আব্দুল মাজিদ শুরু করেছিলেন ভালোই। লেগ স্পিনার রশিদ খানের প্রথম বলেই ছক্কা মারেন লং অনকে। কিন্তু আউট হয়েছেন বাজে ভাবে। মাশরাফিকে প্রথম বলেই তেঁড়েফুড়ে মারতে গিয়ে বল টেনে আনলেন স্টাম্পে (১৪ বলে ১৮)। খুলনার আশা হয়ে থাকা হাসানুজ্জামানকেও ফেরান মাশরাফি। নাবিল সামাদকে দারুণ এক ফ্লিকে ছক্কা মেরেছিলেন। পরে মাশরাফিকেও বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে একটু বাড়তি লাফানো বলে কটবিহাইন্ড (২৬ বলে ২৯)। নাবিলকেই চার ও ছক্কা মেরে ঝড় তোলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন নিকোলাস পুরান। ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানকেও ফিরিয়েছেন কুমিল্লা অধিনায়ক। বড় কিছু করতে পারেননি আরিফুল হকও। টিকে কেবল মাহমুদউল্লাহ। তিনিই বাড়িয়ছেন দলের রান। ২৬ রানে মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান রশিদের হাতে। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ৩৮ বলে ৪০ করে। বোলিংয়ের পর ব্যাট হাতেও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিলেন মাশরাফি। এমন দিনে জয়ের হাসিটাও তারই প্রাপ্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মারলন স্যামুয়েল।