মোদির নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ‘উদ্ধৃত ও কর্তৃত্বপূর্ণ’ : ড. অমর্ত্য সেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৫০০ ও ১ হাজার রুপির নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে উদ্ধৃত ও কর্তৃত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন ভারতরতœ খেতাবপ্রাপ্ত নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. অমর্ত্য সেন। নোট বাতিলকরণ অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ন্ত্রণে অতি সামান্য ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি মনে করেন। মোদির সঙ্গে মতাদর্শের পার্থক্যের কারণে নয়, বরং নোট প্রত্যাহার মৌলিক মতবাদ লঙ্ঘন করায় এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন তিনি। এনডিটিভি
সেন বলেন, সরকার যে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, সবাই সে উদ্দেশ্যের প্রশংসা করেছে। তবে কালো টাকা নিয়ন্ত্রণে এ সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হবে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ বাস্তবায়নে অর্জনের চেয়ে ভোগান্তির মাত্রা বেশি। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এনডিটিভির ‘দ্য বাক স্টপস হেয়ার’ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ৮ নভেম্বর মোদির আকস্মিক নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে তাৎক্ষণিকভাবে অচল হয়ে যায় বাজারের ৮৬ শতাংশ নগদ অর্থ। সেন বলেন, বাজারে প্রচলিত নগদ অর্থে অবৈধ অর্থের পরিমাণ ছিল খুবই কম। মাত্র ৬ থেকে ১০ শতাংশ অপ্রদর্শিত অর্থ বাজার থেকে সরাতে নোট প্রত্যাহার করায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গোটা ভারতের অর্থনীতি। নোট প্রত্যাহারের অভিপ্রায়কে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, অভিপ্রায় বাস্তবায়নে সরকার যে সংস্কার পদ্ধতি অনুসরণ করেছে, তা ত্রুটিপূর্ণ। অবৈধ অর্থ নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই মানবিক ও বিবেচক পদ্ধতিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত, যা এক্ষেত্রে ঘটেনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে তিনি কেন ‘উদ্ধৃত’ বলে অভিহিত করেছেন, তা জানতে চাইলে অমর্ত্য সেন বলেন, আকস্মিক এ ঘোষণায় মুদ্রা ব্যবস্থার ওপর থেকে জনগণের আস্থা উঠে যাওয়ায় তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি আরও জানান, আস্থাই পুঁজিবাদের মূল ভিত্তি। সরকারের এ পদক্ষেপের ফলে বর্তমানে সাধারণ মানুষ দেশের অর্থনীতির ব্যাপারে দ্বিধান্বিত হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে সরকার ব্যাংক হিসাবের ক্ষেত্রেও এমন অবিবেচক সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তখন হয়তো ব্যাংক হিসাব থেকে একটা নির্ধারিত সীমার অধিক অর্থ উত্তোলনে গ্রাহকদের নিজের সততার প্রমাণ দিতে হবে।
সেন জানান, অবৈধ অর্থ নিয়ন্ত্রণে নরেন্দ্র মোদি সফল হলে তিনি অব্যশই তাকে সাধুবাদ জানাবেন। তবে অবৈধ অর্থ নিয়ন্ত্রণের এ প্রচেষ্টায় আইন মান্যকারী ও বৈধ অর্থ বহনকারী নাগরিকরা যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন, সে বিষয়েই তিনি উদ্বিগ্ন। প্রসঙ্গত, সরকারের সঙ্গে মতবিরোধের জেরে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্ষদ থেকে অপসারিত হয়েছেন অমর্ত্য সেন। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ