আজ মান্নার জামিনের কাগজপত্র যাচ্ছে নিম্ন আদালতে
রিকু আমির: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার জামিনের কাগজপত্র আজ রোববার যাচ্ছে নিম্নœ আদালতে। এখানের কাজ শেষে আগামী সোমবারই এসব কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া হবে কাশিমপুর কারাগারে। সেদিনই মুক্তি মেলার জোর সম্ভাবনা আছে এক বছর নয় মাস ধরে কারাবন্দি মান্নার। নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল্লাহ কায়সার গতকাল শনিবার দুপুরে দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে জানান, গত বৃহস্পতিবারেই মান্নার জামিনের কাগজপত্র সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা স্বাক্ষর করেছেন। শুক্র-শনিবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় রোববার এসব কাগজপত্র নেয়া হচ্ছে নি¤œ আদালতে। সোমবার সকালেই মান্নাকে মুক্ত করে আনার জন্য যাওয়া হবে কাশিমপুরে। পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে গত সোমবার জামিন পান নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
রাষ্ট্রদ্রোহ ও সেনা বিদ্রোহে উসকানির অভিযোগে দায়ের করা দুটি মামলায় হাইকোর্টের দেয়া জামিনাদেশ সেইদিন বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি এসকে সিন্হার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ আদেশটি দিয়েছিল।
মান্নার আইনজীবী ইদ্রিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছিলেন, পাসপোর্ট জমা রাখার শর্তে আপিল বিভাগ দুটি মামলায় মাহমুদুর রহমান মান্নার হাইকোর্টের দেয়া জামিন বহাল রেখেছেন। গত রোববার জামিন বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানি শেষ করেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। পরে আদেশের জন্য গত সোমবার দিন ধার্য করেন। মান্নার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ড. শাহদীন মালিক ও ইদ্রিসুর রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
মান্নার জামিনের বিষয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে নিশ্চয়তার আভাস ছিল। আভাসের তথ্য দৈনিক আমাদের অর্থনীতির কাছেও ছিল এবং গত শুক্র, গত শনি ও গত রোববার জামিনের বিষয়ে আগাম সংবাদ প্রকাশিত হয় দৈনিক আমাদের অর্থনীতিতে।
আভাস পেয়ে মান্নার পরিবার, নাগরিক ঐক্য ও তার শুভাকাক্সক্ষীদের মধ্যেও জামিনের উচ্চাশা প্রকাশ পায়। সম্প্রতি সাংবাদিক শফিক রেহমান, দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জামিন এ উচ্চাশার মাত্রা আরও বৃদ্ধি করে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিউইয়র্কে অবস্থানরত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা এবং অন্য একজন ব্যক্তির সঙ্গে মান্নার ভাইবারে কথোপকথনের দুটি অডিও ক্লিপ প্রকাশ হয়।
গুলশান থানায় ২৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। ওই বছরের ৫ মার্চ সেনা বিদ্রোহে উসকানির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়। এ দুটি মামলায় নিম্ন আদালত মান্নার জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে হাইকোর্ট ১০ নভেম্বর সেনা বিদ্রোহে উসকানির মামলায় এবং রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গত ৩০ আগস্ট জামিন দেন।
হাইকোর্টের দেয়া ওই জামিনের বিরুদ্ধে সরকারপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ জামিন স্থগিত করে দেন। পাশাপাশি সরকারপক্ষকে হাইকোর্টের জামিনের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতির আবেদন) করতে বলেন। এরপর সরকারপক্ষ লিভ টু আপিল করলে তার ওপর গত রোববার শুনানি শেষ হয়ে গত সোমবার হাইকোর্টের জামিন বহাল রাখে আপিল বিভাগ। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম