কম বয়সী, নিঃসঙ্গ এবং রাগী মানুষেরা মিথ্যা বলে বেশি
পরাগ মাঝি: ‘যদি আপনি সত্যিটাকে জানতে চান তবে একজন বয়স্ক নারীকে জিজ্ঞাসা করুন।’
আমাদের মধ্যে খুব কম মানুষই আছে যারা দাবি করতে পারে যে, তারা কখনো মিথ্যা বলেননি। কিন্তু লাই ডিটেক্টর (মিথ্যা চিহ্নিতকরণ যন্ত্র) ছাড়া আর কোনো উপায় কি আছে মিথ্যা সম্পর্কে অবহিত হওয়ার?
নতুন একটি গবেষণায় আমাদের মধ্যে কারা সবচেয়ে বেশি মিথ্যা বলে সে সম্পর্কে একটি ধারণা পাওয়া গেছে। আর নতুন এই গবেষণা ফলটি আসলে কমবয়সী এবং নিঃসঙ্গ মানুষদের জন্য নেতিবাচকই বলা যায়। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক সম্প্রতি আমেরিকার প্রধান প্রধান সম্প্রদায়, বিভিন্ন আয় এবং বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের প্রায় ৩ হাজার ৩৪৯ জন নাগরিকের ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করে। মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের সঙ্গে মিথ্যা বলার সম্পর্ক কোথায় গবেষকরা মূলত তা-ই দেখতে চেয়েছিলেন। জরিপের পর গবেষকরা কিছু সুনির্দিষ্ট উপসংহারে এসে উপনীত হন।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে গবেষকরা দেখতে পান, যারা সবচেয়ে বেশি মিথ্যা বলছেন তারা হলেন, অপেক্ষাকৃত কম বয়স্ক, অবিবাহিত পুরুষেরা। তাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো- ‘আপনি কি কাউকে রাস্তা পার হতে সহযোগিতা করেছেন?’
গবেষক দলের নেতা আর্ক উডসাইড হাফিংটন পোস্টকে বলেন, ‘উর্বর মিথ্যাবাদী নির্ধারণের জন্য কেবল স্বল্প শিক্ষিত তরুণরাই যথেষ্ট নয়। কিন্তু যদি রাস্তায় মারামারি করে এমন স্বল্প শিক্ষিত তরুণদের হিসেবে ধরা হয় তবে একজন উর্বর মিথ্যাবাদী পেতে আপনাকে বেশিদূর দৌড়াতে হবে না।’
মিথ্যা বলার দ্বিতীয় পর্যায়টি দখলে রেখেছেন নারীরা; বিশেষত তারাই যারা অপেক্ষাকৃত তরুণী অথচ বিবাহিত এবং স্বল্প শিক্ষিত হয়েও যারা আয় করছেন ভালো। উডসাইড ভাষায়, সেইসব নারীরা যারা টাকাকেই বিয়ে করেছেন।
অন্যভাবে বললে, সম্ভবত সেসব নারী যারা স্বল্প শিক্ষিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের মোক্ষম আয়ের পন্থাটিকে গ্রহণ করেছেন।
গবেষকরা বলছেন, আপনি যদি সত্যিকারেই কারো সঙ্গে সদালাপ করতে চান তবে বেছে নিতে পারেন অবিবাহিত এবং সত্তরোর্ধ্ব কোনো মহিলাকে।
গবেষকরা বছরে যারা অন্তত ১২টি মিথ্যা বলে তাদেরকে ‘বড় মিথ্যাবাদী’র কাতারে রেখেছেন এবং এভাবে দেখা গেছে, ১৩ শতাংশ মানুষ মোট মিথ্যার প্রায় ৫৮ শতাংশই বলে থাকে। তবে গবেষণায় এও দেখা গেছে, আমাদের মধ্যে অন্তত ২১ শতাংশ মানুষ আছেন যারা মিথ্যাহীন জীবন-যাপন করতে চান।
উডসাইড আরও ব্যাপকার্থে বলেন, ‘আমরা যদিও নিজেকে ভালো করেই চিনি বলে মনে করি, আসলে তা নয়। আর এই মনোভাবকেই সবচেয়ে বড় মিথ্যা বলে আমরা চিহ্নিত করতে পারি।’ দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট