প্রতিবন্ধী দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধীদের সবসময় আলাদা স্কুলে নয়, সাধারণ স্কুলে রেখে শিক্ষা দিতে হবে
বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মাসহ সবাইকে হারানোর পর দেশে ফিরে পারিবারিক সব সম্পদ প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর-অবহেলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। শিক্ষা নীতিমালায় বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধিতার কারণে কোনো শিশুকে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে দূরে রাখা যাবে না।
গতকাল শনিবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২৫তম আন্তর্জাতিক ও ১৮তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যারা বিখ্যাত হয়েছিলেন, তাদের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধীদের মাঝে অনেক মেধা লুকিয়ে থাকে। সেই সুপ্ত মেধা বিকাশের সুযোগ করতে দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবন্ধীসহ অনগ্রসর-অবহেলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণের কথা সংবিধানেই রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সংবিধানে জাতির জনক শুধু সংবিধানেই এর সংযোজন ঘটাননি, প্রতিবন্ধীদের ভাগ্যের উন্নয়নেও সকল পদক্ষেপ নেন। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের সেবা করা সরকারের দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী, অটিস্টিকসহ পিছিয়ে থাকা মানুষের সেবা করা অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতিবন্ধীরা ক্রিকেট খেলা থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে অবদান রাখছে। তারা বিদেশ থেকে স্বর্ণপদকও লাভ করেছে।
সরকারি চাকরিতে আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম প্রতিবন্ধী কোটা চালু করেছে বলেও জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা যে সংবিধান দিয়েছেন। সেখানে সমগ্রজাতির ভাগ্য উন্নয়নের দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সংবিধানে প্রত্যেক মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
ব্যক্তিগত সম্পদও জনকল্যাণে দান করেছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সম্পদের সবই আমরা জনগণকে দান এবং একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি। এখান থেকে আমরা প্রতিবন্ধীদের লেখাপড়ার জন্যও সহায়তা দিয়ে থাকি।
সাধারণ স্কুল-কলেজে প্রতিবন্ধীদের শিক্ষাব্যবস্থা চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ স্কুল নয়। সাধারণ স্কুলেও প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, সব সময় তাদের আলাদা রাখলে পুরোপুরি সুস্থ হবে না। সাধারণ ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে থাকলে, তাদের সঙ্গে মিশলে প্রতিবন্ধীরাও অনেকটা সুস্থ হয়ে যাবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা দেখেছি।
প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে কাজ করতে বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী মানুষের কল্যাণে কন্যা সায়মা হোসেন পুতুলের অবদানের কথাও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, গ্লোবাল অটিজম পাবলিক হেলথ ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশের জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান সায়মা হোসেনের প্রচেষ্টায় দেশ ও বিদেশে অটিজমের গুরুত্ব ও সচেতনতা বেড়েছে। ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাকে ‘এক্সিলেন্স ইন পাবলিক হেলথ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেছে। সম্পাদনা: আলাউদ্দিন