নেত্রকোনা, পাবনা ও কাহারোলে মূর্তি ভাঙচুর
নেত্রকোনা প্রতিনিধি: নেত্রকোনা সদর উপজেলায় একটি রক্ষাকালীর মন্দিরের চারটি মূর্তি দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর করেছে। এর মধ্যে তিনটি মূর্তি ওই মন্দির থেকে নিয়ে অন্তত ৩০০ গজ দূরে ধানক্ষেতের পাশে মাটির সঙ্গে গুঁড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। মন্দিরের নাম ময়মনসিংহ রুহি সর্বজনীন রক্ষাকালী মন্দির। মন্দিরটি উপজেলার সিংহের বাংলা ইউনিয়নের রায় দুমরুহি গ্রামে অবস্থিত। শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে গতকাল রোববার সকাল ছয়টার মধ্যে যেকোনো সময় ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। এ নিয়ে গত দুই মাসে দুটি উপজেলায় চারটি মন্দিরের মূর্তি ভেঙেছে দুর্বৃত্তরা। এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল ছয়টার দিকে ওই গ্রামের রামচরণ সরকারের স্ত্রী মনমোহিনী গরু নিয়ে মাঠে যান। তিনি এ সময় একটি ধানক্ষেতের আইলে তিনটি মূর্তির ভাঙা অংশ দেখতে পান। পরে তিনি স্থানীয় লোকজনকে জানালে তারা কাছের রক্ষাকালীর মন্দিরে গেলে মন্দিরের কাঠ ও টিন দিয়ে তৈরি দরজা খোলা দেখতে পান। মন্দিরের ভিতরে গিয়ে মহাদেবের মূর্তি ভাঙা অবস্থায় দেখতে পান।
খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী প্রশান্ত কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ আবু নাসেরসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বেলা দেড়টার দিকে বলেন, এ ঘটনায় ওই মন্দিরের সভাপতি সাধন সরকার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন।
এদিকে, মো. সাইফুল ইসলাম, কাহারোল (দিনাজপুর) থেকে জানান, দিনাজপুরের কাহারোলে মূর্তি ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
গত শনিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার দিকে কাহারোল উপজেলার ৫নং সুন্দরপুর ইউনিয়নের মালগ্রাম পানুয়া পাড়া গ্রামের শিক্ষক শচীন্দ্র নাথ দাস-এর পারিবারিক টসি কালি মন্দিরে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে প্রবেশ করে ২টি মূর্তির মাথা ভেঙে পাশের পুকুরে ফেলে দেয় এবং দুর্বৃত্তরা বাড়ির বাইরে খড়ের ৪টি টালিতে অগ্নি সংযোগ করে পালিয়ে যায় বলে বাড়ির মালিকের স্ত্রী শ্যামলী রানী দাস জানান।
এদিকে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জনশীল গোপাল, রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত ডিআইজি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির, দিনাজপুর পুলিশ সুপার হামিদুল আলম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আসলাম মোল্লা, এএসপি (বীরগঞ্জ সার্কেল) সুজন সরকার, কাহারোল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মনসুর আলী সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম ফারুক, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাবু গোপেশ চন্দ্র দাস, ৫নং সুন্দরপুর চেয়ারম্যান শরিফ উদ্দীন আহম্মেদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, কলিট তালুকদার পাবনা থেকে জানান, পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর থানার কাজী শরীফপুর বারোয়ারী কালিমন্দিরের দুটি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। আমিনপুর থানার ওসি (তদন্ত) মঈনুদ্দিন জানান, শনিবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় মাসুমদিয়া ইউনিয়নের কাজিরহাট ফেরিঘাটসংলগ্ন কাজী শরীফপুর বারোয়ারী কালিমন্দিরের তিনটি প্রতিমার মধ্যে একটি প্রতিমার মাথা, একটি প্রতিমার হাত ও পা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।
মন্দির কমিটির সভাপতি নিরাঞ্জ সিকদার জানান, রোববার সকালে প্রতিমা ভাঙচুর দেখে থানায় জানালে খবর পেয়ে আমিনপুর থানা পুলিশ মন্দির পরিদর্শন করে।
ওসি (তদন্ত) মঈনুদ্দিন আরও জানান, কারা, কি কারণে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, মন্দিরের গেট অরক্ষিত থাকার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। সম্পাদনা: তারেক