আজাদ হোসেন সুমন: দেশের যে কোনোস্থানে জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকা মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি মেজর জিয়া, মারজান, বাশারুজ্জামান, মেজর জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলাসহ অন্য জঙ্গিরা এ হামলা চালাতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। শতভাগ জঙ্গি নির্মূল না হওয়ায় তারা এ আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। অবশ্য পুলিশ জঙ্গি হামলা বা নাশকতার আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন এ মূহুর্তে পলাতক জঙ্গিরা নিজেরাই ‘দৌড়ের উপর’ সুতরাং আপাতত কোনো সম্ভাবনা নেই।
জানাগেছে, ১ জুলাই গুলশান হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর নড়ে চড়ে বসে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনায় র্যাব পুলিশ ও গোয়েন্দা ইউনিটের সদস্যরা জঙ্গিবিরোধী ক্রুসেড ঘোষণা করে। এরপর তারা কম্বিং অপারেশন, সোর্স নিয়োগ করে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ড্রাস্টিক অ্যাকশনে যায়।
পুলিশ একের পর এক জঙ্গি ডেরায় অভিযান পরিচালনা করে। কল্যাণপুর, রুপনগর, আজিমপুর, নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়া, গাজীপুর ও টাঙ্গাইলে পুলিশের অভিযানের পর জঙ্গিবাদ অনেকটাই নির্মূল হয়ে আসে। পুলিশ ৯০ ভাগ জঙ্গি নির্মূল হয়েছে বলে দাবি করে। এ অবস্থায় ১০ ভাগ জঙ্গি ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
এ ব্যাপারে বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল আবদুর রশিদ বলেন, জঙ্গিরা ঝেঁকে বসেছিল। এখন আর সে অবস্থা নেই। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর আছে। এটা তারা সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য-কিন্তু নাশকতা বা হামলা হবে না এমন কোনো গ্যারান্টি কেউ দিতে পাওে না। তিনি বলেন, যেহেতু মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি মেজর জিয়া মারজানসহ বেশকিছু জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আত্মগোপনে থেকে তারা নাশকতামূলক তৎপরতায় লিপ্ত হওয়ার চেষ্টা করবে। সুতরাং হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।
নাশকতা বা জঙ্গি হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, জঙ্গিরা শেষ। ইতিমধ্যে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে পালিয়ে গেছে। তারা নিজেরাই আছে দৌড়ের উপর। হামলার সাহস তারা পাবে না মন্তব্য করে পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, পুলিশ এখন অনেক ম্যাচিউর। পুলিশ এখন জঙ্গিদের নারী নক্ষত্র জানে। ফলে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা চোখ-কান খোলা রেখে দায়িত্ব পালন করছে বলেও তিনি দাবি করেন।
সাবেক আইজিপি মোদাব্বির চৌধুরী বলেন, পুলিশ সাফল্যের সঙ্গে জঙ্গিদমন করেছে। কিন্তু যেসব জঙ্গি ধরা ছোঁয়ার বাইরে আছে-তারা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। দেশের ভাবমূর্তি পরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করার লক্ষ্যে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের দৃঢ়তায় সেটা ইতিমধ্যে অনেকটাই নস্যাৎ হয়ে গেছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম