চিকিৎসার অভাব ও খাদ্য সংকটে অসুস্থ হয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে শরণার্থী রোহিঙ্গা শিশুরা
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে শিশুরা আছে সবচেয়ে বেশি নাজুক পরিস্থিতিতে। বিশেষ করে যেসব শিশু বাবা-মা হারিয়েছে তাদের জীবন কাটছে অনাহারে।
একাধিক সূত্র পাওয়া তথ্যমতে, টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এ পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি শিশু এসেছে। এদের কেউ বাবা-মা এবং আত্মীয়দের সঙ্গে এসেছে। তবে এসব শিশুর প্রায় প্রত্যেকেই খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছে। আবার দীর্ঘ এই নির্যাতনের ধকল সইতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েছে অনেকেই। শীতের কাপড় আর খাদ্য সংকটে জর্জরিত
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশুরা। তিন বছরের শিশু নিজের নামটি পর্যন্ত এখনো ভালো করে বলতে পাওে না। গত ১৮ নভেম্বর মিয়ানমারের মংডুর নাইসং পাড়ায় অতর্কিতে হামলা চালায় দেশটির সেনা বাহিনী। আবুল হোসেনের বয়স তিন বছর। তার মা আজুদা বেগম ছিলেন সন্তান সম্ভবা। সেনাবাহিনীর গুলির শব্দে নাইসং পাড়া মানুষ দিগি¦দিক ছুটতে থাকে। এসময় আবুলের বাবাও দৌড়ে পালায় তাকে ও তার মাকে নিয়ে। কিন্তু মগরা তার মাকে আটকিয়ে ফেলে। আবুল মায়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকে।
পরে সেনাবাহিনী আবুলের মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং পরেরদিন আজুদা মারা যায়। বাবা কোথায় আছে জানে না। পাড়ার এক আত্মীয় ইয়াসমিনদের দয়ায় এপাড়ে আসে আবুল। সরেজমিন কক্সবাজারে উখিয়ায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনিবন্ধিত ক্যাম্প কুতুপালং গিয়ে দেখা মেলে আবুলের সঙ্গে। না খেয়ে কাটছে তার সময়। কেউ দয়া করে দিনের একটু আধটু খেতে দিচ্ছে। গায়ে কাপড় নেই। সন্ধ্যা নামলে আবুল নাইসং পাড়ার অন্যদের সঙ্গে একটি ঘিঞ্জি ঘরে রাত কাটায়। তারা দয়া করে খেতে দিলেই শুধু খায়। ক্যাম্পের বাসিন্দা শহীদুল জানান, শত শত শিশু না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। অনেকের মা আছে বাবাকে মেরে ফেলেছে। এক কাপড়ে চলে এসেছে। এভাবে টেকনাফের লেদা বস্তিতেও দেখা গেছে শিশুদের মানবেতর জীবন যাপনের চিত্র। তারা কিছুই জানেনা। দয়া করে কেউ খেতে দিলে খাচ্ছে।