ওবামাকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জিমি কার্টারের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ফিলিস্তিনকে পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে এক প্রবন্ধে তিনি এমন আহ্বান জানিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন জিমি কার্টার। তিনি ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ পাওয়া উচিত ফিলিস্তিনের। নিউ ইয়র্ক টাইমসে তিনি লিখেছেন, আমি এ বিষয়ে আশ্বস্ত যে, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা পরিবর্তন হওয়ার আগে ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তবে এক্ষেত্রে সময় অনেক কম। আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হচ্ছে বারাক ওবামার। তার আগেই কূটনৈতিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে এই প্রশাসনকে। এটা খুব সাধারণ অথচ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একই সঙ্গে ওই অঞ্চলের সঙ্কট সমাধানে একটি উপায় বের করতে প্রস্তাব পাস করা উচিত জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলের। এমন প্রস্তাবে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের বাইরে ইসরায়েলি সব বসতিকে অবৈধ ঘোষণা করা উচিত। আরও উচিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ভিতরে নিরস্ত্রীকরণ করা। সম্ভব হলে সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী দেয়া। জিমি কার্টার ফিলিস্তিন ভূখন্ডের ভিতরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের ভবন নির্মাণের সমালোচনা করেন। জিমি কার্টারের নিহের কথায়, ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত করে অধিক থেকে অধিক বসতি নির্মাণ করছে ইসরায়েল। এভাবে তারা ফিলিস্তিনি ভূখন্ড ক্রমাগত দখল করছে। এই দখলীকৃত ফিলিস্তিনে বসবাস করছেন ৪৫ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি। কিন্তু তারা ইসরায়েলের নাগরিক নন। তাদের বেশির ভাগকেই বসবাস করতে হচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক শাসনের অধীনে। ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচনে তাদের কোনো ভোটাধিকার নেই। ইসরায়েলের এমন কর্মকান্ডের সমালোচক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল স্থায়ীভাবে ফিলিস্তিনের ওই ভূমি দখলে রাখতে পারে না। এর আগে জাতিসংঘে দেয়া এক ভাষণে বারাক ওবামা বলেছেন, ইসরায়েল যদি স্থায়ীভাবে ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে না রাখে, ফিলিস্তিন যদি ইসরায়েলের বৈধতা স্বীকার করে তাহলে উভয় পক্ষই উপকৃত হবে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় আসছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে চলমান সঙ্কট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচলিত নীতি অনুসরণ করবেন।
তার একজন উপদেষ্টা বলেছেন, দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমস্যা সমাধানে ট্রাম্প কতটা সক্ষম হবেন তা নিয়ে তিনি সন্দিহান। ওদিকে ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর ইসরায়েল সরকারের এক মন্ত্রী বলেছিলেন, ট্রাম্পের বিজয় মানে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে দাবি শেষ হয়ে গেছে। সেপ্টেম্বরে নিউ ইয়র্কে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। তখন তিনি নেতানিয়াহুকে আশ্বস্ত করেন এই বলে যে, জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পদক্ষেপ নেবেন তিনি। তার এ পদক্ষেপ হবে ব্যতিক্রম। এমন বিবৃতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনিরা। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ