ইসমাঈল হুসাইন ইমু: রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে চার তরুণ নিখোঁজ হয়েছে। তারা হলেন, সাফায়েত হোসেন, জায়েন হোসেন খান পাভেল, সুজন ও মেহেদী। এর মধ্যে সাফায়েত ও পাভেল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের ছাত্র। বাকি দুজনের মধ্যে সুজন বনানী এলাকার একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিল। তবে মেহেদী সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। তারা চারজনই বন্ধু। তাদের বয়স ২২ থেকে ২৫ এর মধ্যে। গত ১ ডিসেম্বর এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিখোঁজ পাভেলের বাবা রাসেল খান বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ১১৯) করেছেন।
পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বলেন, এ ঘটনায় একটি জিডি হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। কেউ তাদের তুলে নিয়ে গেছে, নাকি তারা স্বেচ্ছায় নিখোঁজ হয়েছে, এসব বিষয় সামনে রেখেই তদন্ত চলছে।
জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর বনানী কাঁচাবাজার এলাকায় নর্দান ইউনিভার্সিটির পাশের একটি রেস্তোরাঁয় সাফায়েত ও পাভেল একসঙ্গে খাবার খায়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় অন্য বন্ধু সুজন। এর কিছুক্ষণ পর তারা একসঙ্গে রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার পর জানা যায়, তাদের সঙ্গে মেহেদী নামে আরও এক বন্ধুও নিখোঁজ হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, চার তরুণের এক সঙ্গে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের কেউ অপহরণ করলে পরিবারের কাছে মুক্তিপণের টাকা চাইতো। কিন্তু নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন পরও পরিবারের সদস্যদের কেউ ফোন দেয়নি। পরিবারের সদস্য ও পুলিশ কর্মকর্তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সংস্থায় খোঁজ নিয়েছেন। এই চারজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করেছে বলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ কর্মকর্তাদের সন্দেহ, নিখোঁজ তরুণরা স্বেচ্ছায় কোনো ধর্মীয় উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে যোগ দিয়ে থাকতে পারে।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একজন কর্মকর্তা জানান, উগ্র-জঙ্গিবাদে জড়িয়ে যারা ঘর ছেড়েছেন তাদের বেশিরভাগই মাসের শুরুতে অথবা শেষে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। বনানীর নিখোঁজ হওয়ার চার তরুণও ১ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন। এ কারণে তাদের উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়ার সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে। গুলশানসহ অন্যান্য জঙ্গি আস্তানায় নিহত জঙ্গিদের সবাই স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল। তাওসিফ ও নিবরাস ৩ ফেব্রুয়ারি একসঙ্গে ঘর ছাড়ে। ২৯ ফেব্রুয়ারি ঘর ছাড়ে মীর সামিহ মোবাশ্বের। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ঘর ছেড়েছিল রোহান ইমতিয়াজ। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম