উম্মুল ওয়ারা সুইটি টেকনাফ থেকে ফিরে: মিয়ানমারের মংডুর জাম্বইন্যাপাড়া থেকে হ্নিলা সীমান্ত দিয়ে পার হয়ে এসেছেন নুর বানুসহ ২৬ জন। এরমধ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে ধর্ষিত হয়েছেন এমন ১৬ কিশোরী-তরুণী ও নারী রয়েছেন।
গত মঙ্গলবার রাতে তারা দালাল ধরে এপারে এসেছেন। বুধবার সকালে কথা হয় টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনিবন্ধিত ক্যাম্পের বাসিন্দা শহীদুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ওপারে মগরা ধর্ষণ করে আধমরা করে ছাড়ছেন রোহিঙ্গা নারীদের। প্রাণে বাঁচার জন্য এবং বর্বরতা থেকে মুক্তির জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পাড়ি দিচ্ছেন বাংলাদেশে। এসেই পড়ছে নতুন সমস্যা। ১৪ বছরের নুর বানু বলেন, রোহিঙ্গা মেয়েদের এপার-ওপার নেই। আল্লাহও যেন তাদের উপর নারাজ।
শহীদুল বলেন, ওপার থেকে পার হওয়ার সময়ই দালালরা খোঁজ নিয়ে নেন একেকটা নৌকায় কতটা করে কম বয়সী মেয়ে আছে এবং তারা দেখতে কেমন। বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে যখন নৌকা এসে থামে তখন দেখা যায় মেয়েদের আলাদা গাড়ি এবং অটোতে তুলে দেওয়া হয়। আশ্রয় নিতে আসা এসব মেয়েদের কারও সঙ্গে বাচ্চা বা অভিভাবক থাকলেও তাদের আলাদা গাড়িতে করে ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয় আর ওই যুবতী মেয়েদের অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ১৫ দিন আগে লেদা ক্যাম্পে আসা কয়েকটি মেয়েকে স্থানীয় দালালরাই আবার দেহব্যবসা করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে ক্যাম্পের সদস্য শহীদুল ইসলাম জানান। তিনি বলেন, যে পরিমাণ কিশোরী ও তরুণী মেয়ে ওপার থেকে এসেছে, এখন দেখেন তার অর্ধেকও নেই। নিরাপদ আশ্রয়ের কথা বলে তাদের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
নূর বানু বলেন, তাদের সঙ্গে জাম্বইন্যাপাড়া থেকে আসা ৬টি মেয়েকে রাতেই একটি আলাদা গাড়িতে করে তুলে নেওয়া হয়েছে। এক দালাল বলেছে, সবাইকে লেদা ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একেকজনকে একেক গাড়িতে করে। কিন্তু পরে তাদের লেদা ক্যাম্পে পায়নি নূর বানু। একজন বলেছেন, ওই ছয়টি মেয়েকে পাচার করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওপারে ধর্ষিত হওয়া মেয়েরা ক্যাম্পেই ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন।