‘সিআইডির চলমান তদন্তের তথ্য দেয়া হবে ফিলিপাইনকে’
শারমিন আজাদ: ফিলিপাইনের সঙ্গে রিজার্ভ চুরি নিয়ে সিআইডি যে তদন্ত করছে তার তথ্য বিনিময় করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আমাদের অর্থনীতিকে জানান, রিজার্ভ চুরির বিষয়ে বাংলাদেশে সিআইডি যে তদন্ত করছে সে প্রতিবেদনের তথ্য ফিলিপাইনের সঙ্গে শেয়ার করা হবে। তদন্তের স্বার্থে ফিলিপাইনের অনুরোধে এ তথ্য দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা তদন্ত প্রতিবেদন ফিলিপাইনকে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
রোববার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় সরকার গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছে ফিলিপাইন সরকার। বাংলাদেশের একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী বৈঠকের পর রোববার দেশটির অর্থমন্ত্রী কার্লোস ডোমিনগুইজ এক বিবৃতিতে বলেন, তারা চান বাংলাদেশ তদন্ত প্রতিবেদন তাদের সাথে বিনিময় করুক।
তবে এ প্রতিবেদন দেওয়া হবে না জানিয়ে রোববার বিকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। প্রতিবেদন কাউকেই দেওয়া হবে না। সচিবালয়ে নিজ দফতরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি আরও জানান, ফিলিপাইন সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত প্রতিবেদন চায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র থেকে জানা গেছে, সিআইডির চলমান তদন্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারো অ্যাকাউন্টে ডলার জমা হয়েছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের আত্মীয়দের অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গেছে। সিআইডির চলমান এ তদন্তের তথ্যই বিনিময় করা হবে ফিলিপাইনের সঙ্গে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভুয়া সুইফট বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের হিসাব থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনে সরিয়ে নেয়া হয়। এরপর রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের-আরবিসির চারটি হিসাবের মাধ্যমে ওই অর্থ দেশটির জুয়ার টেবিলে চলে যায়।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাত থেকে চুরির সবচেয়ে বড় এই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ডক্টর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের নেতৃত্বে গত মার্চে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তবে বাংলাদেশ সরকার এখনও তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। আরেকটি তদন্ত করছে সিআইডি।
এ ঘটনা তদন্ত করে পিলিপাইনের সিনেট কমিটিও। এরপর ক্যাসিনো মালিকের কাছ থেকে ১ কোটি ৫২ লাখ ডলার উদ্ধারের পর তা ফেরত পায় বাংলাদেশ।
বাকি ৬ কোটি ৫৮ লাখ ডলার উদ্ধারে গত সপ্তাহে পিলিপাইন সফরে যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। দলটি ফিলিপাইনের সিনেট সভাপতি ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছে।