র্যাবের সংবাদ সম্মেলন ডিজে থেকে অস্ত্র ব্যবসায়ী অনিক
ডেস্ক রিপোর্ট : স্কুলের গ-ি পেরিয়ে ডিস্ক জকির (ডিজে) পেশা বেছে নেন তারেক আহমেদ ওরফে অনিক (২৮)। এরপর মাদক ব্যবসা, বালুর গদি দখল ও একপর্যায়ে অস্ত্র ব্যবসায় জড়ান। রাজশাহীর সীমান্ত দিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অস্ত্রের চালান রাজধানী ঢাকায় আনতেন অনিক। সেই অস্ত্র মোটা অঙ্কে বিক্রি করতেন। গতকাল র্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মো. মাসুদ এসব কথা বলেন।
তারেক আহমেদ অনিক ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের সহ-সভাপতি আবু তাহের আহমেদের ছেলে। তবে অনিকের পরিবার বলছে, তারা এসব ব্যাপারে কিছু জানে না। রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুর ও বাড্ডা এলাকায় রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তারেক আহমেদ অনিকের পাঁচ সহযোগীকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে র্যাবের একটি দল। কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাব-১-এর অধিনায়ক তুহিন মো. মাসুদ বলেন, রোববার রাতে উত্তরার আবদুল্লাহপুর ও বাড্ডা এলাকায় অনিকের খোঁজে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অনিকের পাঁচজন সহযোগীকে চারটি বিদেশি পিস্তল, ৩৮টি গুলি ও নয়টি ম্যাগাজিনসহ গ্রেফতার করে র্যাব-১-এর একটি দল। অনিককে গ্রেফতারে অভিযান চালানো হলেও তিনি পালিয়ে গেছেন। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন রুবেল শেখ (২৪), সোহেল মোল্লা (২৪), বাহেস শেখ (৩২), আব্বাস মিয়া (২৫) ও আরিফুল ইসলাম (২৫)। এদের কাছ থেকে অস্ত্র পাচারে ব্যবহৃত একটি পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অনিক রাজধানীর মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়াশোনা করেছেন। অস্ত্র, মাদক, দেহ ব্যবসা করে অল্প দিনের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থ উপার্জন করেন তারেক আহমেদ অনিক। এ ছাড়া জোর করে এলাকায় নির্মাণসামগ্রী সরবরাহের কাজও করতেন তিনি। গত এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে ৪৫ থেকে ৫০টি অস্ত্র কেনাবেচা করেছেন অনিক।
ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তুহিন মো. মাসুদ বলেন, এলাকায় রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বলতেন তিনি। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোর্স হিসেবে পরিচয় দিতেন অনিক। হাতবদলের মাধ্যমে এসব অস্ত্র জঙ্গিদের হাতে আসতেও পারে। তবে এ ব্যাপারে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ নেই।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সীমান্ত থেকে ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায় প্রতিটি অস্ত্র কিনতেন অনিক। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে প্রতিটি অস্ত্র ৭৫ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকায়ও বিক্রি করেছেন তিনি।
ছেলের অস্ত্র ব্যবসা সম্পর্কে কিছুই জানতেন না বলে দাবি করেন যুবলীগ নেতা আবু তাহের আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আমি এসব ব্যাপারে জানি না। আমি টিভিতে দেখেছি। আমি জীবনে কোনো দিন জানতে ও বুঝতেও পারি নাই। আমাদের বাড়িতে ও ছেলের শ্বশুরবাড়িতে র্যাব এসেছিল। তখন থেকে ও ভয়ে পলাতক আছে।’