ভিক্ষায় নয়, মর্যাদা কর্মে
আনিসুর রহমান তপন: ভিক্ষা করার চেয়ে কাজ করা অনেক মর্যাদার। যখন ভিক্ষা করতাম তখন সবাই কেমন অসম্মান করত। এখন নিজে আয় করি। বৌ-বাচ্চা, ছেলে-মেয়ের কাছে অনেক সম্মান পাই। আমি চাই আমার মতো সব প্রতিবন্ধীরা কোনো একটা কাজ করে জীবন চালাবে।
শারীরিক প্রতিবন্ধী অটো রিক্শাচালক নজরুল ইসলাম তার ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বেরিয়ে আসার গল্প করেন এ প্রতিবেদকের সঙ্গে। গতকাল সোমবার বিকাল চারটায় বসুন্ধরা সিটি মার্কেটের সামনে দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ চোখ পড়ে, ‘অটোর পেছনের লেখা। প্রতিবন্ধী আমার দুইটা পা নাই। আমাকে ধাক্কা দিবেন না।’ গাড়ি সিগন্যালে পড়তেই এগিয়ে গেলাম। দেখা গেল চালকের দুটি পা নেই। অটোর সিটে বসে আছেন।
জানতে চাইলে বললেন, গত এক বছর ধরে অটো চালান। এর আগে ভিক্ষা করতেন। কিন্তু সেখানে কোনো মর্যাদা নেই। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার নজরুলের বয়স ৩০ বছর। ৬ বছর বয়স থেকেই ভিক্ষা করছেন। বিয়ে করার পর মেয়ে যখন বড় হতে থাকল তখন তার এ ভিক্ষাবৃত্তি নিয়ে পরিবারে নেতিবাচক কথা উঠতে থাকে। ছেলে-মেয়েরা স্কুলে যেতে চায় না। অপমান বোধ করে। নিজের কাছে নিজেকে খুব ছোট মনে হতে লাগল। ভাবলো কি করা যায়। তারপর সে অনেক ভেবে-চিন্তে অটোরিকশা কিনলো ৯০ হাজার টাকা দিয়ে। এরপর থেকেই যেন জীবনের আসল সম্মান পেতে শুরু করেছে। প্রতিদিন ৫-৬শ টাকা আয় করেন। তেজগাঁও থাকেন। পরিবারের সদস্যরা থাকেন গ্রামের বাড়ি। সবাই তাকে অনেক সাহায্য করে। আর প্রতিবন্ধী হিসেবে মাসে ৫শ টাকা ভাতা পান। নজরুল বলেন, এখন বুঝি কাজ করে খেলে মর্যাদা কতটা বাড়ে। সম্পাদনা: উম্মুল ওয়ারা সুইটি