কোনো ভাস্কর্য কিংবা স্মারক নয় : মৃত্যুর আগে ফিদেল
পরাগ মাঝি: মৃত্যুর আগে ভাই রাউল ক্যাস্ট্রো এবং সন্তান ক্যাস্ট্রো দিয়াজ ব্যালার্টকে সদ্য প্রয়াত ফিদেল ক্যাস্ট্রো বলে গিয়েছিলেন নিজের শেষ ইচ্ছের কথা। বলেছিলেন, মৃত্যুর পর তার নামে যেন কোনো ভাস্কর্য এবং স্মারক চিহ্ন না রাখা হয়। আর তাই ফিদেলের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ছোটভাই রাউল ক্যাস্ট্রো ফিদেলের নামে যেন কোনো ভাস্কর্য এবং ছবি টাঙানো না হয় সে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সর্বশেষ ফিদেলের ছেলে ব্যালার্টও এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে অবহিত করেন।
গত ১৫ নভেম্বর ৯০ বছর বয়সে বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রো মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে নয় দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে কিউবা। ৪ নভেম্বর তার দেহভস্ম সমাহিত করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় শোকের পর্ব শেষ হয়। সমাহিতকরণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ট্রো ফিদেলের নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের লক্ষ্য এবং সমাজতান্ত্রিক নীতির প্রতি অটল থাকার ঘোষণা দেন। প্রয়াত নেতার অনুরোধের প্রতি সম্মান জানিয়ে কিউবার কোনো রাস্তা এবং স্মৃতিস্তম্ভের নাম ফিদেলের নামে করা হবে না বলে ঘোষণা দেন রাউল।
রাউল বলেন, ‘ব্যক্তিপূজার সব ধরনের বিকাশের প্রবলবিরোধী ছিলেন ফিদেল।’
বাবাকে নিয়ে বলতে গিয়ে ফিদেলের ছেলে ব্যালার্টও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘কোনো ভাস্কর্য এবং স্মারক চিহ্নে বেঁচে থাকার কোনো ইচ্ছেই নেই ফিদেলের। তিনি বিশ্বাস করতেন, বিপ্লবই বেঁচে থাকবে চিরকাল এর কোনো সমাধি না থাকলেও।’
ফিদেলের দেহভস্মবাহী একটি যান রাজধানী হাভানা থেকে যাত্রা শুরু করে সারাদেশ ভ্রমণ করে শনিবার সান্তিয়াগোতে পোঁছায়। এ সময় হাজারো ভক্ত ‘ফিদেল দীর্ঘজীবি হও’ এবং ‘আমি ফিদেল’ ধ্বনিতে মুখরিত করে চারপাশ। এ সময় ব্রাজিলের লুলা ডি সিলভা ও দিলমা রৌসেফসহ ভেনেজুয়েলা, নিকারাগুয়া এবং বলিভিয়ার নেতারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
১৯৫৩ সালের ২৬ জুলাই যে মানকাদা সেনানিবাসে গুটিকয়েক সৈন্য নিয়ে তৎকালীন স্বৈরশাসক বাতিস্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করেছিলেন ফিদেল। সেই অভিযান ব্যর্থ হলেও মূলত সেখান থেকেই কিউবার মুক্তি আন্দোলনের দাবানল ছড়িয়ে পড়েছিল।
ফিদেলের দেহভস্ম সান্তিয়াগোর ইফিজেনিয়া কবরস্থানে রাখা হয়। সম্পাদনা: কামরুল আহসান