টার্গেট ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচন রোডম্যাপে অগ্রসর হচ্ছে আওয়ামী লীগ
আগামী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করে রোডম্যাপ করে অগ্রসর হচ্ছে
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। গত অক্টোবরে স্মরণকালের জমজমাট জাতীয় সম্মেলনের পর দ্রুততার সঙ্গে প্রায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণায় বেশ চাঙ্গা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে। শুরু হয়েছে আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচনি জরিপের কাজ। দ্রুতই হতে যাচ্ছে মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল। নির্বাচনকে সামনে রেখে আরও শক্তিশালী করা হবে মন্ত্রিসভা। আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ-সংগঠনের সম্মেলন। নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি তৃণমূলকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
আগামী ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের তিন বছর পূর্তি হবে। এর পরই মন্ত্রিসভা রদবদল হবে বলে সূত্র জানায়। দক্ষতা, যোগ্যতা ও সংগঠনকে শক্তিশালী রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা মূল্যায়ন হবে রদবদলে। বাদ পড়ার পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত হতে পারেন কেউ কেউ। গুরুত্ব পাবে দক্ষ ও তরুণ নেতৃত্ব। তিন বছরে যারা কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি এবং নানা কারণে সমালোচিত হয়েছেন তাদের মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। পাশপাশি মন্ত্রিসভার বর্তমান সদস্যদের মধ্যে যারা বয়সের ভারে ন্যূব্জ, তাদেরও বাদ দেওয়া হতে পারে। মন্ত্রিসভায় নতুন কারা আসছেন তা নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল ও আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে।
জানা গেছে, অঙ্গ-সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদ দ্রুত শেষ হবে। আগামী বছরই কয়েকটি অঙ্গ সংগঠনের সম্মেলন হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চলছে অঙ্গ-সংঠনের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আলোচনা।
এদিকে আওয়ামী লীগ নীতিনির্ধারণী মহল আগামী জাতীয় নির্বাচনের টার্গেট করেই অগ্রসর হচ্ছে। এজন্য প্রতিটি সংসদীয় আসনের হিসাব শুরু করেছে বিশেষ কমিটি। একটি গোয়েন্দা সংস্থা সংসদীয় আসনে বর্তমান সংসদ সদস্যদের বাস্তব অবস্থা তদন্ত করছে। সম্ভব্য প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করছে। জরিপের কাজ শেষ হলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জমা দেবে। এ কারণে বর্তমান সংসদ সদস্য এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের এলাকায় জনসম্পৃক্ত কাজ বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্বাচন পরিচালনা কমিটি কাজ শুরু করেছে বলেও জানা গেছে।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য জেলা পরিষদেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে চায় আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী মহল। জয় পেতে চায় ঘোষিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। এরপর নতুন করে তৃর্ণমূল সাজাতে চায় কেন্দ্রীয় কমিটি। যেসব জেলা-উপজেলায় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে দ্রুতই সেখানে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি জেলা ও উপজেলার কমিটি পূর্ণাঙ্গ ঘোষণার চাপ দেবে কেন্দ্রীয় কমিটি। কেন্দ্র থেকে তৃর্ণমূলের স্তর পর্যন্ত ঢেলে সাজাতে চায় বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি।
নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী প্রায় সার্বক্ষণিক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানম-িস্থ কার্যালয়ে অফিস করছেন। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা দ্রুতই পুনর্গঠন হতে পারে। এটি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্র থেকে তৃর্ণমূল পর্যন্ত ঢেলে সাজানো হবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হতে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, আগামী জানুয়ারি সরকারের তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে সরকারের উন্নয়নকে জনগণের সামনে তুলে ধরার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ প্রচার আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। কার্যত আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচনকে সামনে রেখে সকল প্রস্তুতি এখন শুরু হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনকে টার্গেট করেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি রোডম্যাপ করে এগোচ্ছে। সম্পাদনা: আলাউদ্দিন