২০১৯ সালে কেউ নিরক্ষর থাকবে না : মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার
আনিসুর রহমান তপন: সরকারের কোনো অর্থ ব্যয় না করে ২০১৯ সালের মধ্যে সবাইকে অক্ষরজ্ঞান দেওয়া সম্ভব। নিরক্ষরমুক্ত দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া ও পার্বতীপুরকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে নিয়ে দেশের সব নিরক্ষর মানুষকে আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী অক্ষর জ্ঞান দেওয়া হবে। বেসরকারি পর্যায়ে এ পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রীর নিকট উপস্থাপন করলে তাতে সায় দিয়েছেন তিনি। গত সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রীর নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে
এ কথা বলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার। তিনি বলেন, রাজনীতির পাশাপাশি স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর সহায়তায় শিক্ষিত মানুষকে সম্পৃক্ত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সারাদেশে কত মানুষ নিরক্ষর তা জরিপ করা হবে। এরপর তাদের সহায়তায় নিরক্ষর মানুষদের খুব অল্প সময়ের মধ্যে অক্ষর জ্ঞান দেওয়া হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী জানান, সরকারি অর্থ খরচ না করে ২০১৫ সালে দিনাজপুরের ফুলবাড়িয়া এবং পার্বতীপুর উপজেলাকে নিরক্ষরমুক্ত করা হয়। স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সবগুলো সহযোগী সংগঠন এবং শিক্ষকসহ শিক্ষিত সচেতন মানুষদের উদ্বুদ্ধ করে এ কাজ করা হয়েছে। এ ধরনের পাইলট প্রকল্পের আওতায় দেশের সব উপজেলার নিরক্ষর সব মানুষকে ২০১৯ সালের আগেই অক্ষরজ্ঞান দিয়ে নিরক্ষরমুক্ত করা সম্ভব। তিনি বলেন, পাশাপাশি সারাদেশের ২৫০ উপজেলার ৪৫ লাখ মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দিতে ২০১৪ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৪৫২ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নিরক্ষর দূরীকরণে এ টাকা ব্যয় হবে বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে। সরকারের অনুমোদন দেওয়া এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের পাশাপাশি আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এটি সম্পূর্ণ নতুন একটি উদ্যোগ। এ উদ্যোগের মাধ্যমে ফুলবাড়িয়া ও পার্বতীপুর উপজেলার ১৯টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার নিরক্ষর মানুষকে এক বছরের মধ্যে অক্ষরজ্ঞান দেওয়া হয়েছে। এ দুটি উপজেলাকে নিরক্ষরমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
মুস্তাফিজুর রহমান ফিজার আরও বলেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের ৪৫ লাখ লোককে নিরক্ষরমুক্ত করতে কিছু এনজিওকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। একনেকে পাস করা প্রকল্প বাস্তবায়নে এখন এনজিও বাছাইয়ের প্রক্রিয়া চলছে। এই প্রকল্প সঠিক বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্ধারিত ২৫০ উপজেলার নিরক্ষর মানুষের সঠিক জরিপ থাকা প্রয়োজন। তা না হলে এনজিওগুলো অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন লোকদের নিরক্ষর করার ঘোষণা দিতে পারে। এতে প্রকৃত নিরক্ষর মানুষগুলো নিরক্ষরই থেকে যাবে। ভবিষ্যতে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের বিনা পয়সার সামাজিক কর্মসূচির জরিপ কাজে লাগবে। তখন আমরা সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলোকে বলতে পারব ২৫০ উপজেলার এই মানুষগুলো নিরক্ষর, তাদের তোমরা অক্ষর জ্ঞান দিতে পারো। তাহলে সরকারি প্রকল্পে ফাঁকি দিতে পারবে না তারা। ফিজার জানান, দেশের আট বিভাগে দফায় দফায় দলীয় নেতাকর্মীদের ডেকে এ বিষয়ে বৈঠক করে নির্দেশনা দেওয়া হবে। দিনাজপুরের কাজটিকে সামাজিক কাজের পাইলট প্রকল্প ধরে তাদের এ কাজে সম্পৃক্ত করা এবং প্রয়োজনীয় বিষয় জানানো হবে। আর এভাবেই দেশের সব নিরক্ষরকে অক্ষরজ্ঞান দিয়ে নিরক্ষরমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব বলে দাবি করেন সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম