জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় কঠোর অবস্থানে নারী ডিসিরা
ফারুক আলম: এবছর জেলা প্রশাসক সম্মেলনে সরকারের ১৯টি দিকনিদের্শনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়Ñ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার বিষয়টি। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কৌশল নিয়েছে জেলা প্রশাসন। জনসমাবেশ ছাড়াও স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করছেন নারী ডিসিরা। তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদকের কথা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক সায়লা ফারজানা বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সভা, সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনের কাজকর্ম ছাড়াও ডিসি অফিসের কর্মকর্তারা যেকোনো সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার সময় জঙ্গিবাদের বিষয়টি তুলে ধরছেন। অভিভাবকদের বলছি, আপনাদের ছেলেমেয়ে কোথায় যাচ্ছে কীভাবে সময় ব্যয় করছে প্রতিনিয়ত লক্ষ্য রাখুন। স্কুল শিক্ষকদের বলছিÑ শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত স্কুলে আসছে কি না তা দেখতে হবে। কোনো শিক্ষার্থী দীর্ঘদিন স্কুলে না এলে তার খোঁজখবর নিতে হবে। সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গিহামলার পরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, মাঠপর্যায়ের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, মসজিদের ইমাম, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নাটোরের জেলা প্রশাসক শাহিনা খাতুন বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রত্যেক ওয়ার্ড থেকে জেলা কমিটি পর্যন্ত মিটিং করা হচ্ছে। এসব কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে। কোথাও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে
মিটিং হলে সেখানেও জঙ্গিবাদের ইস্যুটি নিয়ে কথা বলি। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যেকোনো অনুষ্ঠানে এটি বলি। রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক জিনাত আরা বলেন, জঙ্গি, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে জেলাপর্যায়ে কী কী কাজ করছিÑ প্রত্যেক মাসে এর প্রতিবেদন তৈরি করতে হয়। প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে জমা দিই। আমাদের কাজের শুক্রবার কিংবা শনিবার নেই। প্রতিদিন সভা, সমাবেশ, র্যালিতে অন্য সব বিষয়ের চেয়ে এ তিনটি ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এর সফলতাও দেখতে পাচ্ছি। উল্লেখ্য, এ বছর ২৬ থেকে ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনে প্রধান আলোচ্য বিষয় ভূমি ব্যবস্থাপনার উন্নতি হলেও তা ছাপিয়ে জায়গা করে নেয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ। জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন, স্থানীয় পর্যায়ে জনমত গঠন করে সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ডিসিদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম মোকাবিলার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে সবাইকে নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি গঠনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এ সব কাজে ডিসিদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন মন্ত্রীরা। সম্পাদনা: হাসিবুল ফারুক চৌধুরী