পেপার মিলের বর্জ্যে মরছে মাছ, হুমকির মুখে গাছপালা ও কৃষিজমি
মো. জাকির হোসেন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : পরিবেশের নীতিমালা উপেক্ষা করে নীলফামারীর সৈয়দপুরে স্থাপিত ইকু পেপার মিলের বিষাক্ত বর্জ্যে অপসারিত হচ্ছে খড়খড়িয়া নদীতে। এর ফলে নদীর মাছসহ আশপাশের গাছপালা মরে যাচ্ছে। পানি ব্যবহারকারীরা হচ্ছেন রোগাক্রান্ত। অতিসত্বর এর প্রতিকার না হলে শহর বা গ্রামাঞ্চলের নদ-নদীর মাছ ও গাছপালা হারিয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞদের সাথে আলাপ করে এসব মন্তব্য পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সৈয়দপুরের রাবেয়া মিল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন খড়খড়িয়া নদীর পাশে ২০১৪ সালে স্থাপিত হয় ইকু পেপার মিল। নীতিমালা রয়েছে ট্যানারী বা পেপার মিলের বর্জ্যরে দূষণ থেকে রেহাই পেতে মালিক পক্ষকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু ইকু পেপার মিলের মালিক সে নীতিমালার তোয়াক্কাই করছেন না। সরাসরি নদীর সাথে ড্রেনের সংযোগ দিয়ে স্রোতের মত অপসারণ করছেন তরল বর্জ্য। এতে করে নদীর পানি দুই আকার ধারণ করেছে। বর্জ্যরে দুর্গন্ধে মাছ, ছোট ছোট প্রাণী ও গাছপালা মারা যাচ্ছে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আশপাশের এলাকার ফসলী জমির ফসল। ইকু পেপার মিলের সূত্র জানায়, পেপার তৈরিতে পুরাতন কাগজের সাথে ব্যবহার করা হচ্ছে কেমিক্যাল জাতীয় সিনিকেট কাস্টিক, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, হাইড্রোজেন, প্যারা-অক্সাইড, হাইড্রোজেন সালফেটসহ ১২ ধরনের কেমিক্যাল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর স্রোতে কাগজ তৈরী মিলের কেমিক্যাল বর্জ্য খড়খড়িয়া নদীতে অপসারণ হচ্ছে। এতে করে নদীর পানির উপরের স্তর সাদা বর্ণ ধারণ করেছে। গন্ধে আশপাশ এলাকায় টিকা মুশকিল।
ওই মিলের জিএম একরামুল হক বলেন, নীতিমালা কি তিনি জানেন না। মালিক যেভাবে বলেছেন সেভাবেই উৎপাদন করছেন তিনি। এরপরই যদি ক্ষতির অভিযোগ থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
সৈয়দপুরের সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দীপ কুমার পাল বলেন, বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার কথা পরিবেশ অধিদপ্তরের। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কেন নিশ্চুপ থাকছেন তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে তিনি কার্যকর ব্যবস্থা নিতে উপর মহলে নক করবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। সম্পাদনা : তারেক