ইমরুল শাহেদ: বুধবার পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের চিত্রাল থেকে ইসলামাবাদ যাওয়ার পথে ৪৭ জন যাত্রীসহ অ্যাবোটাবাদের গ্যারিসন টাউনের কাছে ভেঙে পড়ল পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)-র বিমান পিকে-৬৬১। চিত্রাল থেকে ইসলামাবাদের পথে হ্যাভেলিয়নের কাছে ভেঙে পড়ে বিমানটি। ডন অনলাইন জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হ্যাভেলিয়ন অঞ্চলের সরকারি কর্মকর্তা তাজ মোহাম্মদ খান রয়টার্সকে বলেছেন, কেউ বেঁচে আছে বলে মনে হয় না। দেহগুলো এমনভাবে পুড়ে গেছে যে, কাউকে শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, বিমানটি মুখ থুবড়ে পড়ার আগে আগুন ধরে গিয়েছিল। জুম্মন খান নামে একজন বলেছেন, তারা যে দেহগুলো স্তূপের ভেতর থেকে বের করেছেন সেগুলো পুরো শরীর নয়। কে নারী বা কে পুরুষ বোঝা যায়নি। সেগুলো ছিল ছিন্ন হাত বা পা। বিমানটিতে অভিনেতা, গায়ক ও টিভি উপস্থাপক জুনায়েদ জামশেদও ছিলেন সপরিবারে। এবিপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গায়ক থেকে ইসলাম প্রচারক হয়ে ওঠা জুনায়েদ জামশেদ ধর্মীয় বক্তৃতা দেওয়ার জন্য চিত্রাল গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার ভাই। তিনি তাবলীগ জামাতের একজন সক্রিয় সদস্য। এছাড়াও বিমানে ছিলেন চিত্রালের ডেপুটি কমিশনার ওসামা ওয়ারিচও।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ বিমানে ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন বলে বলা হলেও পিআইএর চিত্রাল কর্মকর্তারা বলেছেন, চারজন ক্রুসহ বিমানে ছিলেন ৪১ জন যাত্রী। কিন্তু বিমানটির যাত্রী তালিকায় দেখা যায়, বিমানে ছিলেন ৩১ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা ও ২ শিশু। তিনজন বিদেশিও ছিলেন বিমানটিতে।
সরকারি বিমান পরিবহণ সংস্থার বিমানটি দুপুর সাড়ে তিনটা নাগাদ চিত্রাল থেকে যাত্রা শুরু করে। ইসলামাবাদের বেনজির ভুট্টো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথাছিল বিকাল ৪.৪০ নাগাদ।
পিআইএর এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, উড্ডয়ন শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই রাডারের নজরদারির বাইরে চলে যায় বিমানটি। এর আগে বিমানের পাইলট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাছে বিপদবার্তা পাঠিয়েছিলেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, বিমানে ছিলেন ৪২ জন যাত্রী। তাদের মধ্যে ৯ মহিলা ও ২ শিশু। এছাড়াও ছিলেন দুই বিমানসেবিকা ও তিন পাইলট। অকুস্থলে সেনা হেলিকপ্টার ও সেনা সদস্যদের পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র।
অ্যাবোটাবাদ জেলা পুলিশ মাজব ও পিপিলিয়ানের মাঝে বিমানটির ভেঙে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তারা হ্যাভেলিয়নের পাহাড়ি এলাকায় একটি বিমান ভেঙে পড়তে দেখেছেন। যেখানে ভেঙে পড়েছে সেখান থেকে ধোঁয়ার কু-লি তারা দেখতে পেয়েছেন। সম্পাদনা: আলাউদ্দিন