সঙ্কুচিত হচ্ছে মিডিয়ার স্বাধীনতা
সজল সরকার: বিশ্বব্যাপী সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। সম্প্রতি এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ১২ বছরের মধ্যে বর্তমানে ইউরোপিয়ান দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশেই কমেছে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা। বিশ্বের যেসব দেশে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা কমেছে তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। এছাড়াও এ তালিকায় চীন, মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা ও লাটিন আমেরিকা রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংগঠন ‘ফ্রিডম হাউজ’ এ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
রিপোর্টে বলা হয়, ১২ বছরের মধ্যে এ বছরই সবচেয়ে বেশি মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে প্রধানত রাজনৈতিক ও সন্ত্রাসবাদীদের শক্তির প্রভাব বিস্তারের কারণে। সন্ত্রাসীদের হুমকি এবং সরকার পক্ষের অসহযোগিতার ফলেই মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। স্পেন, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন ও পোল্যান্ডের মতো উন্নত দেশেও সরকার আরোপিত বিভিন্ন আইনের ফলে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা সঙ্কুচিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০১৫ সালে স্পেন সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেকোনো কর্মকা-ের ছবি ব্যবহারের জন্য অনুমতির নিয়ম করে এবং নিয়ম ভঙ্গকারী সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ফ্রান্সে চার্লি হেবো ম্যাগাজিনে হামলা হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ সংবাদপত্রের প্রকাশিতব্য বিষয়ের ওপর নানান বিধি-নিষেধ জারি করে। ব্রিটেন সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কাছে যেকোনো ব্যক্তির ফোনালাপ দিতে বাধ্য থাকবে- এমন একটি আইন পাস করতে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়া সরকারও ফোন কোম্পানিগুলো যে কারও ফোনালাপ অন্তত ২ বছর সংগ্রহে রাখবে বলে আইন করে ২০১৫ সালে। প্যারিসভিত্তিক আরেকটি সংগঠন রিপোর্টারস উইদাউট বোর্ডারস (আরএসএফ) এক রিপোর্টে জানায় কানাডায় মিডিয়ার স্বাধীনতা হ্রাস পেয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বের মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষ সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা উপভোগ করে এবং ৪১ শতাংশ মানুষ আংশিক স্বাধীনতা পায়। অন্যদিকে ৪৬ শতাংশ মানুষই মিডিয়ার স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে না। রিপোর্টে যেসব দেশের সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা সবচেয়ে বেশি কমেছে তাদের মধ্যে বাংলাদেশ, তুর্কি, বুরুন্ডি, ফ্রান্স, সার্বিয়া, ইয়েমেন, মিসর, ম্যাকেদোনিয়া এবং জিম্বাবুয়ে অন্যতম। মধ্যপ্রাচ্যে সাংবাদিকরা সবচেয়ে কঠিন সমস্যার মধ্যে রয়েছে বলে রিপোর্টে বলা হয়, সেখানে জঙ্গিবাদ ও সরকারের প্রতিযোগিতা চলে কে সংবাদ মাধ্যমকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারবে- তা নিয়ে। সাংবাদিকদের কাজ করার অন্তরায় হিসাবে এ রিপোর্টে বলা হয় দুর্নীতি, অপরাধ, পরিবেশ ও ভূমি উন্নয়ন, ধর্ম ও আইনের শাসনের অভাবই দায়ী। সূত্র: দ্য হুট, এফএ। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম