কামরুল আহসান: ডিসেম্বরের ২৬-২৭ তারিখ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে পার্ল হারবার পরিদর্শনে যাচ্ছেন ওবামার সঙ্গে। তবে গত বৃহস্পতিবার তার অফিস থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, তিনি সেখনে গিয়ে ক্ষমা চাইবেন না।
১৯৪১ সালে ৮ ডিসেম্বর আমেরিকার বিমান ও নৌ ঘাঁটি হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে এক অতর্কিত আক্রমণ চালিয়েছিল জাপানের নৌবাহিনী। তাতে নিহত হয় ২ হাজার ৪০২ জন। হতাহত হয় আরও ১ হাজার ২৮২ জন। আমেরিকার ১৮৮ বিমান বিধ্বস্ত হয় জাপানের
নৌ বাহিনীর হামলায়। অপ্রত্যাশিত এ আক্রমণ ইতিহাসে চিহ্নিত হয়ে আছে কুখ্যাত দিন হিসেবে। এর পর পরই আমেরিকা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ে এবং ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় ও ৯ আগস্ট নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা ফেলে। যাতে হিরোশিমায় মারা যায় ১ লাখ ৮০ হাজার মানুষ, আর নাগাসাকিতে মারা যায় আরও ৮০ হাজার মানুষ।
চলতি বছরের ২৭ মে জাপানের হিরোশিমা পরিদর্শনে এসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। পারমাণবিক বোমার আঘাতে নিহত মানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেও ওবামা সেদিন ক্ষমা চাননি। ক্ষমা না চাওয়ার বিষয়টি আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ওবামা প্রশাসন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ওটাই ছিল কোনো আমেরিকার প্রেসিডেন্টের হিরোশিমা সফর। আর এই প্রথমবারের মতো আমেরিকার পার্ল হারবার যাচ্ছেন জাপানের কোনো প্রধানমন্ত্রী। জাপান সরকারি কার্যালয় থেকেও জানানো হয়েছে, ‘জাপানের প্রধানমন্ত্রী সেখানে শুধু নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই যাচ্ছেন, ক্ষমা চাইতে না।’
জাপানের কেবিনেট সেক্রেটারি ইয়োশি হিদে সুগা জানিয়েছেন, ‘এ সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানো যে, ভবিষ্যতে যেন এরকম ভয়ঙ্কর মুহূর্ত জাপান ও আমেরিকার জন্য আর না আসে।’
জাপান-আমেরিকার সম্পর্ক ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক ভালো। আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব এস্টন কার্টার জানিয়েছেন, ‘একটি কথা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, শিনজো অ্যাবে যেভাবেই হোক ওবামাকে খুশি করতে চাইবেন’।
শিনজো আ্যবে অবশ্যই চান আমেরিকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত করতে। তাই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে না হতেই বিশ্ব নেতাদের আগে তিনিই প্রথম ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নিউইয়র্কে গিয়ে সাক্ষাৎ করেন।
জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর জাপান-আমেরিকার সম্পর্ক কেমন হবেÑ তা নিয়ে শিনজো অ্যাবে এখনই কূটনৈতিক কার্যক্রম চালানো শুরু করেছেন। সূত্র: দ্য হিল। সম্পাদনা: আলাউদ্দিন