পরাগ মাঝি: প্রেমময় সম্পর্কই দাম্পত্যকে করে রোমাঞ্চকর। তাই বিয়ের আগে-পরে প্রেম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর একে অবহেলা করেই চরম মূল্য দিতে বসেছে জাপানিরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেমহীনতা জাপানি তারুণ্যের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। দীর্ঘদিন তারা কাটিয়ে দেয় প্রেমহীন। আর সময় চলে গেলে নেহাতই যেন তারা বিয়ে করে ফেলে ১০ বছরের পুরনো বন্ধুকে। এসব সম্পর্কে নতুন করে প্রেম জন্ম নেওয়ার আসলে কিছু থাকে না।
দেশটির সরকারি এক জরিপে দেখা যায়, ৬৯ শতাংশ জাপানি তরুণ এবং ৫৯ শতাংশ তরুণীর কোনো প্রেমময় সম্পর্ক নেই। ফলস্বরূপ এ দেশটিতে নতুন শিশুর জন্মহার একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে জাপানে প্রতি ১ হাজার মানুষের মাঝে নতুন শিশুর জন্ম হয়েছে মাত্র ৮.৪ জন। এ পরিসংখ্যানটি পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। এভাবে চলতে থাকলে ১২৭ মিলিয়ন মানুষের দেশ জাপানে ২০৬০ সালে লোকসংখ্যা থাকবে মাত্র ৮৭ মিলিয়ন। তবে, জাপানের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পপুলেশন অ্যান্ড সোস্যাল সিকিউরিটি রিসার্চ’র একটি জরিপে এও জানিয়েছে যে, দেশটির ৮০ শতাংশ অবিবাহিত নাগরিক বিয়ে করতে আগ্রহী।
‘মাতোমি নাভের’ নামে জাপান সম্পর্কীয় একটি ওয়েবসাইটে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে পাঠকরা বেশকিছু জীবনের গল্প জমা করেছেন। এসব গল্পে উঠে এসেছে কেমন পরিস্থিতিতে তারা নিরুপায় হয়ে বহুবছরের পুরনো বন্ধুর সঙ্গেই দাম্পত্য সম্পর্ক গড়ে তোলেন। জাপানি ভাষায় এ প্রবণতাকে বলা হয় ‘কোসাই জিরো নিচিকোন’ অর্থাৎ ‘প্রেমহীন বিয়ে’।
সম্প্রতি জোশি স্পা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ সংখ্যায় একটি কলামে বিয়েকে সুইসাইডের সঙ্গে তুলনা করেছেন লেখক। এ বছরের শুরুর দিকে যৌনসঙ্গীবিষয়ক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে দেশটির প্রথিতযশা কলামিস্ট এবং সমাজবিজ্ঞানী মাকি ফুকাসাওয়া মিডিয়ার ব্যবহৃত ‘যৌন সমস্যা’ শিরোনামটির সমালোচনা করেন। অবশ্য এর বিকল্প একটি শব্দ তিনি উল্লেখ করেন। তা হলো- ‘তৃণভোজী পুরুষ’। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম