উম্মুল ওয়ারা সুইটি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর পিছিয়েছে। এ মাসের ১৮ তারিখে দুদিনের সফরে দিল্লি যাওয়ার কথা থাকলেও সফরটি হচ্ছে না। আগামী বছরের শুরুর দিকে এই সফরে যেতে চান শেখ হাসিনা। আগামী ১৮ ডিসেম্বর দুদিনের সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণ গ্রহণ চুক্তি এবং আলোচনার বেশ কিছু এজেন্ডা নির্ধারণ সম্পন্ন হওয়ার পর শেষ মুহূর্তে সফরের তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্রের দাবি, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তি এবং ভারতের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে না পারার কারণেই এই সফরটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে গত মঙ্গলবার দিল্লির বার্তা পাওয়ার পরই বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সফর পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। দিল্লির বার্তায় বলা হয়েছে, তিস্তার চুক্তি করতে আগ্রহী নরেন্দ্র মোদি। তবে এখনো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে বিষয়টি চূড়ান্ত করা যায়নি। ফলে দিল্লি বাংলাদেশের কাছে প্রস্তাব দিয়েছে, সফরে তিস্তার বিষয়ে আলোচনা এগোবে কিন্তু চূড়ান্ত রূপ নাও পেতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, মোদি তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আগ্রহী। কিন্তু এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ কয়েকটি রাজ্যের স্বার্থ জড়িত। সেটির সুরাহা করতে পারেনি। আবার বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত আঞ্চলিক নিরাপত্তা চুক্তি ও সামরিক সহযোগিতাবিষয়ক যে প্রস্তাব দিয়েছে সেটিও বাংলাদেশ সরকারের ভাবার বিষয় রয়েছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীই চান এই সফরের মধ্যে কোনো ঐতিহাসিক চুক্তি হোক। ফলে অমীমাংসিত বিষয়গুলো চূড়ান্ত না করে শেখ হাসিনা দিল্লি সফর করতে চান না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, অনিবার্য কারণবশত সফরটি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আশা করা হচ্ছে, আগামী বছরের জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারি মাসে এ সফরটি হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চলতি মাসের ১৮ ও ১৯ তারিখে শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের দিল্লি সফরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পানি সহযোগিতার উপর জোর দেওয়ার কথা ছিল।
অন্যদিকে ভারতের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হচ্ছিল নিরাপত্তা, সামরিক ও সন্ত্রাসবাদ সহযোগিতার উপর। এর আগে ২০১০ সালে শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত সফর করেন। এছাড়া, গত অক্টোবরে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস-বিমসটেক সম্মেলনে যোগ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, এই সফরকে ঘিরে ইতোমধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকসহ প্রায় সব আনুষ্ঠানিকতাই সম্পন্ন হয়েছে। তিস্তার পাশাপাশি গঙ্গা ব্যারেজসহ ২০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। সম্পাদনা: শাহানুজ্জামান টিটু