অজুহাত রদবদল ও মনিটরিং সেল এক বছর ধরে বন্ধ বেসরকারি হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন
রিকু আমির: এক বছর ধরে বন্ধ করে রাখা হয়েছে সারাদেশের বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স নবায়ন। অভিযোগ- স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা রদবদল, হাসপাতালগুলোকে মনিটরিংয়ের উদ্দেশ্যে গঠিত মনিটরিং সেলের অজুহাত দেখিয়ে এ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। মূলতঃ স্বাস্থ্য অধিদফতরের খামখেয়ালিপনা এজন্য দায়ী। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী- ঢাকাসহ সারাদেশে চার হাজার ৬২৯টি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক আছে। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা নয় হাজার ৮০৫টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের শেষ ভাগে, চলতি বছরের প্রথম ভাগে র্যাব, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের অভিযানে রাজধানীর বেশকিছু নামীদামী হাসপাতালের কপালে খড়গ পড়ে। বহু চাঞ্চল্যকর অনিয়ম প্রকাশ্যে চলে আসে। এরপর থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতর বিশেষ মনিটরিং সেল করেছে সব হাসপাতালের প্রতি নজর রাখার উদ্দেশ্যে। এ কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নাকি লাইসেন্স নবায়ন চালু হবে না।
বিষয়টিকে অযৌক্তিক বলে দাবি করছেন- বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ক্লিনিক ও হাসপাতাল শাখার কর্মকর্তাদের রদবদলের জন্য বন্ধ রাখাকেও অযৌক্তিক দাবি করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহাখালীতে অবস্থিত একটি বেসরকারি স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বৃহস্পতিবার দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, এক বছর হয়ে গেছে, নবায়নের কাগজ দিয়েছি। কিন্তু কোনো খবরই নেই। গেলে উত্তর দেয়, হয়ে যাবে, হচ্ছে ইত্যাদি। তিনি বলেন, বহু চেষ্টা করে জানলাম মনিটরিং সেল ও রদবদলের কথা। কিন্তু লাইসেন্স নবায়নের জন্য এটা কোনো কারণই না। সরকারি হাসপাতালে কর্মকর্তা কর্মচারি রদবদল হবেই। তাই বলে কাজ বন্ধ থাকে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধানম-ির একটি বেসরকারি ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের প্রশ্ন- লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ রেখে কী ধরনের মনিটরিং? নবায়ন চালু রেখে মনিটরিং সেল সক্রিয় রাখতে সমস্যা কীভাবে হয়? এটাকে তিনি উদ্ভট পরিকল্পনা হিসেবে আখ্যা দেন।
শুধু ঢাকার বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষই যে এমন কথা বলে ক্ষোভ ঝাড়ছেন, তা-ই নয়। ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কথাও একই। মোবাইল ফোনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ক্লিনিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সে ক্লিনিকের মালিক বলেন, আমরা কাজ করি সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে। কিন্তু নবায়নের খবর নেই এক বছর ধরে। খালি ঘুরায়। এমন কাজ জীবনের এই প্রথম দেখলাম।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ক্লিনিক-হাসপাতাল শাখায় যোগাযোগ করা হলে একজন পদস্থ কর্মকর্তা লাইসেন্স নবায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি মনিটরিং সেল ও রদবদলের অজুহাত দেখান এবং জানান, দ্রুত এটি চালু হতে যাচ্ছে। বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলে পরিচালক স্যারের সঙ্গে কথা বলেন।
সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. সাঈদুর রহমানের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে সাড়া পাওয়া যায়নি। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম