নির্বাচনে প্রতিটি কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে যাদুকরের কোনো প্রভাব পাবেন না : নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী
নুরুল আজিজ চৌধুরী ও হাবিবুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জুয়েল আইসের (যাদুকর) কোনো প্রভাব পাবেন না। নির্বাচনের আগের রাতে বাক্স ভরে দেওয়া অসম্ভব কাজ। নির্বাচনের প্রতিটি কার্যক্রম দৃশ্যমান হবে। এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করে দেশের জন্য একটা মডেল হিসেব তৈরি হবে। নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরপেক্ষ থাকবে। আমরা কারো পক্ষে কাজ করছি তা কেউ বলতে পারবে না। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন-২০১৬ উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে মেয়র প্রার্থীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় নির্বাচন কমিশনার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাবেদ আলী এসব কথা বলেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া। এছাড়া এনসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার নূরুজ্জামান তালুকদার, সহকারী রিটার্নিং জেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য নির্বাচন কমিশনার মেয়রদের কাছ থেকে বিভিন্ন মতামত নেন।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জারেদ আলী আরও বলেন, শপথ নেওয়ার পর থেকেই নির্বাচন কমিশনকে ‘আজ্ঞাবহ’ বলা হলেও প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলাম। বিদায় নেওয়ার আগের কাজ ও কর্মের পরিবর্তন হবে না।
তিনি মেয়র প্রার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, নির্বাচনে সবচেয়ে বড় নিয়ামক হলো ভোটার। ভোটারদের আপনারা উদ্বুুদ্ধ করতে পারলে ভোটকেন্দ্র অবশ্যই ভোটার পূর্ণ থাকবে। ভোটকেন্দ্রে কোনো ধরনের অনিয়ম লক্ষ্য করলে জনগণকে নিয়ে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্বাচনে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তা বরদাশত করা হবে না। একই সাথে কোনো প্রার্থীকে বেকায়দায় ফেলার প্রয়াস ও গ্রহণ যোগ্য হবে না বলে মত দেন।
মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খাঁন বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আছে। তবে সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা আছে।
তিনি নির্বাচন কমিশনারকে জানান, রিটার্নিং অফিসারের বলা ১৭৪টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৩টি কেন্দ্রের ব্যাপারে তাকে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। ভোট কেন্দ্রেই যেন ভোট গণনা করা হয়। তিনি বলেন, হাত-পা বেঁধে দেওয়া যাতে না হয়।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর গণভবনে যাওয়ার প্রসঙ্গে বলেন, গণভবন মানুষের, আর প্রধানমন্ত্রী তো জনগণের, আমারও। তবে কেন এনসিসি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে গণভবনে ডেকে তার পক্ষে কাজ করার জন্য সাংসদের নির্দেশনা দেওয়া হলো। এনসিসি নির্বাচনে সাতাশটি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্র্রেট নিয়োগ দিলেই হবে না, নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে কিনা তা দেখার দাবি রাখেন।
সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত নির্বাচনি বিধি ভঙ্গের যে অভিযোগ তুলেছেন তা অস্বীকার করছি এবং এটি মিথ্যে। নারায়ণগঞ্জে আমি সব সবসময়ই চাপে থাকি। সরকারি দলের প্রার্থী হলেও এ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী থেকে কোনো সুবিধা নেই নাই। প্রশাসন দিলেও আমি নেবো না।
তিনি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করেন, নির্বাচন পরিবেশ এমনভাবে নেওয়া হোক যেন ভোটাররা যাকে ভোট দিতে চায় , তাকেই যেন দিতে পারে। কারো দয়া, দাক্ষিণ্য নিয়ে আমি নির্বাচনে জয়ী হতে চাই না।
তিনি বলেন, অন্যদের চেয়ে আমার বেশি নিরাপত্তা দরকার। আমি এ নির্বাচন কি জন্য, কেন নির্বাচন করছি নারায়ণগঞ্জবাসী খুব ভালো করেই তা জানে।
বিএনপি প্রার্থীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সাখাওয়াত ভাই সাঁতার জানেন, পানিতে ডুববেন না। সাখাওয়াত মতামত দেওয়ার সময়, নির্বাচন কমিশনকে এ নির্বাচন হাত-পা বেঁধে পানিতে ফেলে দেওয়ার মত যাতে না হয় এমন কথার প্রতিউত্তরে তিনি একথা বলেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম