ভিক্ষুকমুক্ত ঢাকা কতদূর!
বিপ্লব বিশ্বাস: রাজধানীর বিশেষ বিশেষ এলাকা থেকে ভিক্ষুকমুক্ত ও তাদের পুনর্বাসন একটি চলমান প্রক্রিয়া বলে জানিয়েছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রাজধানী ভিক্ষুকমুক্ত করা সিটি করপোরেশনের নিজস্ব কোনো কার্যক্রম নয় বলেও জানিয়েছেন তারা।
সিটি করপোরেশনের দাবি, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সমাজসেবা অধিদফতর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ভিক্ষুকমুক্তকরণ ও পুনর্বাসনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। সিটি করপোরেশন এলাকায় করপোরেশন ছাড়া আরও বেশ কয়েকটি সংস্থা ও বেসরকারি সংগঠন এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করে থাকে।সিটি করপোরেশনের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৩ সালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমতি নিয়ে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় রাজধানীর ভিভিআইপি এলাকা বিমানবন্দর, সেনারগাঁও হোটেল, হোটেল রূপসী বাংলা, হোটেল রেডিসন, বেইলি রোড, মিন্টুরোড, কূটনৈতিক জোন ও দূতাবাস এলাকায় ভিক্ষুকমুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সমাজসেবা অধিদফতরের নেতৃত্বে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংগঠনের (এনজিও) সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। অধিদফতর তাদের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই নিয়মিত রাজধানীর নির্দিষ্ট এলাকাগুলোতে ভিক্ষুকমুক্তকরণ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে থাকে।
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সমাজ কল্যাণ কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ‘রাজধানীকে বিশেষ করে ভিআইপি ও ভিভিআইপি এলাকাগুলো ভিক্ষুকমুক্ত করা সিটি করপোরেশনের নিজস্ব কোনো প্রকল্প না। এটা একটি সমন্বিত চলমান প্রক্রিয়া। কার্যক্রমটি মূলত সমাজসেবা অধিদতরের। আমরা শুধু সরকারের এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে থাকি। যেদিন অভিযান থাকে সেদিন অধিদফতর আমাদের অভিহিত করে। অভিযানের দিন আমাদের সমাজ কল্যাণ বিভাগের কর্মকর্তারা ও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত থাকেন। অভিযান শেষ হলে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কর্মকর্তা ওই এলাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণা করে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি লাগিয়ে দেন।’ ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষণার পর ওই সব এলাকায় আবার ভিক্ষুকদের দখলে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘দেখেন সেটা আমরাও জানি, ভিক্ষুকমুক্ত করার কয়েক দিনের মধ্যেই ওই সব এলাকা পুনরায় ভিক্ষুকদের দখলে চলে যায়। কিন্তু আমাদের কিছুই করার নাই। কারণ প্রথমত এটা আমাদের নিজস্ব কার্যক্রম না, দ্বিতীয়ত আমাদের লজিস্টিক কোনো বাহিনী নাই, যারা এসব এলাকায় নিয়মিত নজরদারি করবে। আসলে অভিযানে ডিএমপিও অংশ নেয়, তারা তো সব সময় মাঠেই থাকে। তাই আমাদের চেয়ে তাদের পক্ষেই এসব এলাকাকে ভিক্ষুকমুক্ত রাখা সহজ।’
এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সমাজ কল্যাণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আওতাভুক্ত কূটনৈতিক জোন, গুলশান, বনানী এলাকা, ভিভিআইপি ও ভিআইপি এলাকাগুলো নিয়মিত ভিক্ষুকমুক্ত অভিযান পরিচালিত হয়। এটা একটা নিয়মিত কার্যক্রম। বেশকিছু মানবিক দিক বিবেচনা করেই আমাদের এসব অভিযান চালাতে হয়। ভিক্ষুকদের পুনর্বাসন না করে তাদের ওপর কঠোর হওয়া যায় না। তাই সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রমের অধীনেই এসব অভিযান পরিচালিত হয়।’অভিযানের কয়েক দিনের মধ্যে পুনরায় ভিক্ষুকদের দখলে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘কূটনৈতিক জোন ও এয়ারপোর্ট এলাকায় একটু কড়াকড়ি করা হয়। এসব এলাকায় পুলিশ নিয়মিত নজরদারি করে।’ সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু