বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্যে স্বচ্ছতা, সমন্বয়, সমতা, সরলতা ও বাস্তবায়ন চায় ইইউ
শারমিন আজাদ: ইউরোপিয় ইউনিয়নের হেড অফ ডেলিগেশন পিয়েরে মায়াউডন বলেন, বাংলাদেশের সাথে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বিষয়ে স্বচ্ছতা, সমন্বয়, সমতা, সরলতা ও বাস্তবায়ন চায় ইইউ। এই পাঁচ ইস্যুতেই বাংলাদেশের সঙ্গে বিজনেস ক্লাইমেট বিষয়ে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে আলোচনা করেছেন বলে জানিয়েছেন, পিয়েরে মায়াউডন। তিনি বলেন, এ আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ইউরোপিয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইউরোপিয় ইউনিয়নের হেড অফ ডেলিগেশন।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, স্বচ্ছতা, সমন্বয়সহ ইইউর উত্থাপন করা পাঁচ ইস্যু বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) সাথে বাণিজ্য ক্ষেত্রে চলমান সমস্যা চিহ্নিত করে তা যুক্তিসংগত সমাধানের জন্য সঠিত ৫টি ওয়ার্কিং গ্রুপ সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইউরোপিয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সাথে চলমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইউরোপিয় ইউনিয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের সাথে ইউরোপিয় ইউনিয়ন ফার্মাসিটিক্যাল সেক্টর, ফাইন্যানশিয়াল ফ্লো, ইমপোর্ট ডিউটি কাস্টমস ট্রেড ফেসিলিটেশন, লাইসেন্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ইন দি সার্ভিস সেক্টর এবং ট্যাক্স রিজিম বিষয়ে ৫টি ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করে যাচ্ছে। আলাপ আলোচনার মাধ্যমে চলমান সমস্যাগুলো সমাধান করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, একক দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশের সাথে চলমান বাণিজ্য সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে বিশ^াস করি।
বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে “দ্বিতীয় ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-বাংলাদেশ বিজনেস ক্লাইমেট ডায়ালগ”- শেষে যৌথ প্রেস ব্রিফিং-এ এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশের বিশ^স্ত বন্ধু। তিনি বলেন, দেশ ইতোমধ্যে একটি নিম্নœমধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে পরিণত হয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের পর সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চলছে। ২০২১ সালে দেশের রপ্তানি ৬০ বিমিলয় মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আসবে তৈরি পোশাক থেকে। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি স্পেশাল ইকোনোমিক জোন ঘোষণা করেছেন। এগুলোর উন্নয়ন কাজ চলছে। একটি ইকোনোমিক জোনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বিনিয়োগ করলে সরকার চাহিদা মোতাবেক সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে।
সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান সহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত পিয়েরে মায়াউডন এর নেতৃত্বে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত সোফি প্রিন্জ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত থমাস হাইনরিখ প্রিনজ, স্পেনের রাষ্ট্রদূত এডুয়ারডো ডেল রোয়াসেল ডি লিগলেসিয়া, সুইডেনের রাষ্ট্রদূত জোহান ফ্রিসেল মিকাএল, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হেমনিটিউইনথার, নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত লিওনি কুএলেনারে এবং যুক্তরাজ্যের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মার্ক ক্লেটনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু