ইসমাঈল হুসাইন ইমু: পুরান ঢাকার দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস হত্যা মামলার দ-প্রাপ্ত আসামি রাজন ও মিলন চার বছরেও ধরা পড়েনি। এরা দুজন ঢাকায়ই কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করছে বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ বলছে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জানা গেছে, তিন বছর আগে এই হত্যা মামলার রায় হয়। রায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগ কর্মী রাজন তালুকদারসহ আটজনের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির আদেশ দেন আদালত। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত ছয়জন কারাগারে থাকলেও রাজন ও মীর নূরে আলম লিমন গ্রেফতার হয়নি। এমনকি তারা জামিনও নেননি।
২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপির ডাকা সকাল-সন্ধ্যা অবরোধের সময় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ভেবে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে ছাত্রলীগের একদল কর্মী বিশ্বজিৎকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিরীহ ওই যুবককে দিন-দুপুরে নৃশংসভাবে হত্যার দৃশ্য দেখে আঁৎকে উঠেছিল সারাদেশের মানুষ। চাঞ্চল্যকর ওই হত্যাকা-ের এক বছর পর ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার আদালত ৮ আসামির ফাঁসি ও ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। দ-প্রাপ্ত সবাই জবি শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন কর্মী। রায়ের আগেই পুলিশ ৮ আসামিকে গ্রেফতার করে। কারাগারে থাকা ওই আটজনের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদ- ও দুজনের যাবজ্জীবন সাজা হয়। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত অন্য দুজন রাজন ও লিমন এবং যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত ১১ আসামি গত চার বছরেও গ্রেফতার হয়নি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, পলাতক সব আসামির বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানা জারি রয়েছে। ওই পরোয়ানা আসামিদের ঠিকানা-সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানো হয়েছে। এখন তারাই আসামি গ্রেফতার করবে। তিনি আরও বলেন, ফাঁসির দ-প্রাপ্তরা ঢাকায় প্রকাশ্যে ঘুরছে এমন তথ্য তার কাছে নেই। এমনটা হলে পরোয়ানাভুক্ত এসব আসামিকে যে কোনো থানা পুলিশই গ্রেফতার করতে পারবে।
পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, তদন্ত সংস্থা ডিবি পুলিশ ২০১৩ সালের মার্চে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২১ কর্মীকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দেয়। আদালত সব আসামিকেই সাজা দেন। এর মধ্যে রাজন, লিমন, রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, রাশেদুজ্জামান ওরফে শাওন, ইমদাদুল হক, কাইয়ুম মিয়া ও সাইফুল ইসলামকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়। এ ছাড়া এইচ এম কিবরিয়া, গোলাম মোস্তফা, খন্দকার ইউনুস আলী, তারিক বিন জোহর, মনিরুল হক, আলাউদ্দিন, ওবায়দুল কাদের তাহসিন, ইমরান হোসেন, আজিজুর রহমান, আল আমিন শেখ, রফিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান ও মোশাররফ হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেওয়া হয়। আসামিদের মধ্যে কারাগারে রয়েছে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম শাকিল, মাহফুজুর রহমান নাহিদ, রাশিদুজ্জামান ওরফে শাওন, ইমদাদুল হক, কাইয়ুম মিয়া ও সাইফুল ইসলাম এবং যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত এইচএম কিবরিয়া ও গোলাম মোস্তফা। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম