বিপ্লব বিশ্বাস: কাশিমপুর কারাগারে বিনা বিচারে এক যুগের বেশি সময় ধরে বন্দি হয়ে আছেন, এমন আটজনের সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে তিনজন ১৪ বছর, তিনজন ১৩ ও দুজন ১২ বছর ধরে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ এ বন্দি রয়েছেন।
সম্প্রতি আইজি প্রিজন্স কার্যালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঐ তালিকায় আছেন, একজন গারো তরুণও। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিনাবিচারে আটক এই বন্দিদের মামলা নিষ্পত্তিতে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ। কেরানীগঞ্জের রাজীব, ঢাকার মতিঝিলের মাসুদ ও গাজীপুরের বাবু-এই তিনজন কাশিমপুর কারাগারে বিনাবিচারে বন্দি আছেন ১৪ বছর ধরে। এই সময়ে তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে ৬০ বারেরও বেশি। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি তাদের মামলা সাক্ষ্যগ্রহণ।
সম্প্রতি গাজীপুর কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২ থেকে আইজি প্রিজন্স কার্যালয়ে পাঠানো তালিকায় এই ৩ জন ছাড়াও কাছাকাছি সময়ে বিনাবিচারে বন্দি আছেন আরও ৫জন। এদের মধ্যে ১৩ বছর ধরে বন্দি আছেন কুষ্টিয়ার রাসেল শেখ, ব্রাক্ষণবাড়ীয়ার পারভেজ ও কুমিল্লার আনোয়ার। এরা সবাই ঢাকার বিভিন্ন থানায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলার আসামি। নেত্রকোনার গারো তরুণ লিটন সাংমা কাশিমপুর কারাগারে বিনাবিচারে বন্দি আছেন ১২ বছর ধরে। ঢাকার আদর্শনগরের বাসিন্দা সাইদুরও একই সময় ধরে বন্দি আছেন।
বিনাবিচারে এতোদিন ধরে বন্দি থাকাকে দুঃখজনক বলছেন সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। বলেন, তিনি আইনমন্ত্রী থাকার সময় একবার বিনাবিচারে যাতে বন্দিরা বেশিদিন থাকতে না পারে সে বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েও এগোতে পারেননি।
ভারতের সংবিধান বলছে, কাউকে ছয় মাসের বেশি বিনাবিচারে আটকে রাখা যাবে না। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশের সংবিধানে সুর্নির্দিষ্ট কিছুই বলা নেই। আর দেশের প্রচলিত ফৌজদারি কার্যবিধিতে বলা আছে, কোন মামলা কতদিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী বলছেন বিনাবিচার কথাটার মধ্যেই এক ধরনের অবহেলা লুকিয়ে আছে। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম