কামরুল আহসান ও এম রবিউল্লাহ: আগেই ঠিক করা ছিল নোবেল পুরস্কার স্বহস্তে গ্রহণ করতে সুইডেনের স্টকহোমে যাচ্ছেন না বব ডিলান। স্থানীয় সময় শনিবার, ডিসেম্বরের ১০ তারিখ সকালে সুইডেনের স্টোকহোমে অনুষ্ঠিত হলো এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান। বড ডিলান ছিলেন না তবু যেন ছিলেন। তার বিখ্যাত গান ‘এ হার্ড রেইন’স এ- গনা ফল’ পরিবেশনা করেন প্যাটি স্মিথ। আবেগাপ্লুত হয়ে গানটি গাইতে গিয়ে প্যাটি স্মিথ প্রথমাংশে ভুলে যান। পরে অবশ্য ঠিকঠাকই গেয়ে যান বাকি গানটি । একজন সংগীতশিল্পীকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। সত্যিই কি ডিলান এ পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য? তার রচিত গীতিকবিতা কি সাহিত্য হিসেবে বিচার হতে পারে? তার কোনো গানের লাইন কি কবিতা হিসেবে গ্রহণ করার যোগ্য? এরকমই আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ছিল এ কদিন ধরে। নোবেল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানেও সে আলোচনা বাদ গেল না।
সুইডিশ রাজকীয় সংগীত পরিবেশনার পর মঞ্চে বক্তব্য দিতে উঠেন নোবেল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কার্ল- হেনরিক হেলডেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটা সময় পার করছি, যে, সময় নোবেল পুরস্কারটি খুব গুরুত্বপূর্ণ’। হেলডেন বলেন, ‘এমন একটি সময়’ বলতে আমি ঠিক কী বুঝাচ্ছি’? আমি বলতে চাচ্ছি, আমরা এমন একটি সময় পার করছি যেটি অন্ধকারময়। আলফ্রেন্ড নোবেল নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন তার পুরস্কারটি যেন এমন কারো হাতে যায় যিনি এই অন্ধকার দূর করতে বাতি হাতে দাঁড়িয়েছিলেন’।
ডিলান অবশ্যই এই অন্ধকার সময়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছিলেন, যুদ্ধবিরোধী সংগীতের মাধ্যমে সবাইকে সচেতন করেছেন। তার সংগীত শুধু শোনার জন্য নয়। পড়ার জন্য, বোঝার জন্য, বোধে ও মননে ধারণ করার জন্য। উইলিয়াম ফোকনার কিংবা ভি, এস নাইপলের সঙ্গে তার কোনো পার্থক্য আছে কি-না সেটা কে নির্ধারণ করবে!
পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি সম্পর্কে বব ডিলান এক ম্যাসেজে জানান,‘মনে হচ্ছে আমি চাঁদের পিঠে দাঁড়িয়ে আছি’। আমি স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে পারলাম না বলে দুঃখিত। কিন্তু দয়া করে মনে করবেন এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গ্রহণ করতে আমি সম্মানের সঙ্গে আত্মিকভাবে আপনাদের সঙ্গেই আছি’। ডিলানের ম্যাসেজটি পাঠ করে শোনান সুইডেনে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আজিতা রাজি। নোবেল পুরস্কার পাওয়া বাবদ বব ডিলান পাচ্ছেন ৮ লক্ষ ৭০ হাজার ডলার।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ, তার স্ত্রী রানী সিলভিয়া এবং তাদের কন্যা প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি। সূত্র : বিবিসি, সিএনএন