অভিবাসীর সংখ্যা ৬ কোটি ছাড়িয়ে গেছে অভিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত না করলে ভয়াবহ পরিস্থিতি হবে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি: বিশ্বজুড়ে অভিবাসীর সংখ্যা ৬ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আগামীতে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। অভিবাসী সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে এবং এর জন্য বিশ্ব মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিশেষ অঞ্চল বা রাষ্ট্রের দিকে অভিবাসীদের ঠেলে না দিয়ে এ ব্যাপারে বিশ্বকে একটি সুনির্দিষ্ট চেইনের মধ্যে আসতে হবে।
সম্প্রতি অভিবাসী নিয়ে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর পর্যন্ত বিশ্বে অভিবাসীর সংখ্যা ৬ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যাই দুই কোটি, রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ। সামনের বছরগুলোতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে। আন্তর্জাতিক অভিবাসী সম্মেলনের গত দুদিনের ১৩টি সেশনে ১৩০ দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিরা প্রায় প্রত্যেকেই অভিবাসী বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। প্রত্যেকে একমত হয়েছেন, অভিবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে না পারলে আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। ভারতের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর বলেন, এটি কোনো একটি দুটি বা সংশ্লিষ্ট কোনো দেশের সমস্যা নয়। তাই বিশ্বকে এর সমাধানে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সম্মেলনে জাতিসংঘের প্রতিবেদন তুলে বলা হয়, ২০১৪ সালে বিশ্বজুড়ে অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৯৫ লাখ। কিন্তু এ বছর বেড়ে হয়েছে ৬ কোটিরও বেশি। অর্থাৎ প্রতি ১২২ জনের একজন দেশত্যাগে বাধ্য হচ্ছে। বছরের মাঝামাঝি পর্যায়ে ৩ কোটি ৪০ লাখ মানুষ দেশত্যাগ করে। আগের বছরের তুলনায় যার সংখ্যা ২০ লাখ বেশি।
সম্মেলনে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কমিশন থেকে জানানো হয়, ১৯৯২ সালের পর থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ২ কোটিরও বেশি।
যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রতিনিধিরা জানান, নৈতিক আশ্রয় প্রার্থীদের সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে জার্মানি, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে। উন্নত দেশগুলো এখনো সবচেয়ে বেশি অভিবাসীদের আশ্রয় দিয়েছে। ২০১১ সালে শুরু হওয়া সিরিয়ার যুদ্ধের কারণে অনেক সিরিয়াবাসী দেশত্যাগ করে এবং একারণেই অভিবাসীদের স্রোত এত বেশি।
বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বলেন, যুদ্ধের কারণে অভিবাসীর সংখ্যা বেশি বাড়ছে। আফগানিস্তান, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদানের সহিংস ঘটনার কারণেই অনেকে দেশত্যাগ করেছেন। বুরুন্ডি, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র, কঙ্গো এবং ইরাকেও অস্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ঘটনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীর কথা উল্লেখ করা হয়। সম্পাদনা: রিকু আমির