চবি ছাত্রলীগের ৬ নেতা আজীবন বহিষ্কার
ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ৬ নেতাকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় নেতারা। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া একের পর এক মারামারির ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কার করার কথা জানানো হয়েছে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের স্বাক্ষর রয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। বহিষ্কৃতরা সবাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারী।
যারা বহিষ্কৃত হয়েছে তারা হলোÑ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. রকিব উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু তোরাব পরশ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরমান মিয়া, আপ্যায়ন সম্পাদক মিজানুর রহমান, সদস্য সাইদুল ইসলাম সাঈদ ও আরেফুল হক অপু।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ৮ ডিসেম্বর রাতে ক্যাম্পাসে দলের দুপক্ষের মধ্যে মুখোমুখি গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার রাতে এই সংঘর্ষ শুরু হয়ে দফায়-দফায় পরদিন শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত চলে। এ সময় মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অন্তত ১২ জন। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত বলে ক্যাম্পাস সূত্র জানিয়েছে।
ঘটনার জের ধরে গতকাল ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। দুপুর ১২টায় শুরু হয়ে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী দুই গ্রুপের মধ্যে এ ধাওয়া চলতে দেখা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উভয় পক্ষের প্রায় ৩০ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। দুটি হল থেকে বেশকিছু রামদা, লোহার রড ও লাঠি উদ্ধার করে পুলিশ।
চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার পর আমরা চবির শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে তল্লাশি চালাই। হল দুটি থেকে প্রায় ৩০টি রামদা, ২০টির মতো লোহার রড ও লাঠি উদ্ধার করি। এ সময় আমরা দুপক্ষের ৩০ নেতাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনে ছাত্রলীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে গতকাল দুপুরে ফাহিম হাসান নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে মারধর করে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা। এ ঘটনার জের ধরে ফের দুগ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় দুপক্ষই একে অপরকে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
এ সময় ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপুর অনুসারীরা শাহজালাল হল ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এর পর দুপুর দুইটার দিকে পুলিশ হল দুটিতে তল্লাশি শুরু করে। মানবজমিন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী জানান, ছাত্রলীগের দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় শাহজালাল ও শাহ আমানত হলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। বেশ কয়েকজনকে আটকও করেছে পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি এখন শান্ত। ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।