২০টি জেলা মাদকপ্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত ১৭ জেলার ৭৮ পয়েন্ট দিয়ে ‘অবাধে’ ঢুকছে মাদক দেশে মাদকের সবচেয়ে বড়‘বাজার’ ঢাকা
বিপ্লব বিশ্বাস: মাদক পাচারের ক্ষেত্রে দেশের সীমান্তবর্তী ৩২ জেলাকে অরক্ষিত বলে মনে করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এর মধ্যে ১৭ জেলার ৭৮ পয়েন্ট দিয়ে প্রায়ই ‘অবাধে’ ঢুকছে ফেনসিডিল, হেরোইন ও গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক। এর বাইরে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আসছে ইয়াবার চালান। সম্প্রতি সময়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে মাদকের সবচেয়ে বড় ‘বাজার’ ঢাকা। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ ও শহুরে মানুষদের প্রায় ৫০ ভাগ ঢাকায় বসবাস করেন। এ কারণে এখানে বিভিন্ন ধরনের মাদকের বিস্তার বেশি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা) নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, সীমান্তের কিছু পয়েন্ট দিয়ে আসা মাদকদ্রব্য কয়েকটি রুট ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। সেই পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করে মাদক পাচার ঠেকাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
অধিদফতরের প্রতিবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোর তথ্য পর্যালোচনায় ঢাকাসহ ২০টি জেলাকে মাদক প্রবণ জেলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপর জেলাগুলো হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, সিলেট, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, খুলনা, বরিশাল, সাতক্ষীরা ও যশোর। তথ্য অনুযায়ী, ফেনসিডিল, হেরোইন, গাঁজা, আফিম, মদ ও ইনজেকশনের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়- এমন মাদক আসে ভারতের সীমান্তবর্তী ১৭টি জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে। এর মধ্যে দেশের পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ, দেবহাটা, ভোমরা, ইতিন্দা, কলারোয়া, কাকডাংগা ও পলাশপুর দিয়ে আসে ফেনসিডিল, হেরোইন ও আফিম। এছাড়া যশোরের বেনাপোল, পুয়াটখালী, চৌগাছা, নারায়ণপুর, শার্শা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাস ডাঙ্গা, দর্শনা, জীবননগর, মেহেরপুরের দরিয়াপুর, বুড়িপুতা, তেহাতা ও মুজিবনগর দিয়েও এ ধরনের মাদকদ্রব্য পাচার হয়ে আসে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে অন্যান্য মাদকের পাশাপাশি ‘ইনজেক্টিং ড্রাগস’ আসে রাজশাহীর মনিগ্রাম, বাঘা, চারঘাট, সারদা, ইউসুফপুর, কাজলা, বেলপুরিয়া, রাজশাহী শহর, হরিপুর, গোদাগাড়ি, নওগাঁর শিমুলতলী, চকমলিডাংগা পাড়া, পতœীতলা, রাধানগর, হাটপাড়া, শীতলামঠ, ছলন্দর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট, শাহবাজপুর, বিনোদপুর ও কানসাট এলাকা দিয়ে।
এছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার ৩৬টি পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাদক ইয়াবা। এক্ষেত্রে নাফ নদীর ১৪ কিলোমিটার এলাকাকে ‘ক্রসিং পয়েন্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার পাচার রুটের মধ্যে রয়েছে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার শাহপরীর দ্বীপ, বর্মাপাড়া উল্ল্যেখযোগ্য। প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের নাফ নদীর জাদীরমুড়া পয়েন্ট থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত এলাকা দিয়েই মূলত নৌপথে ইয়াবা আসে। প্রতিবেদনটি ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু