ঝিনাইগাতীর বেদেপল্লীর শিশুরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত
মো. আব্বাস উদ্দিন, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) : সরকার শতভাগ শিক্ষার হার বাড়ানোর জন্য নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কারণ শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নয়ন করা সম্ভব না। তাই সরকার গরিব ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা সুবিধার জন্য নানা মুখি কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তারপরেও এই সময়ে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ডেফলাই গ্রামের বেদে পল্লীর অনেক ছেলে মেয়েরা শিক্ষার আলো থেকে বাহিরেই থেকে যাচ্ছে। ওই বেদে পল্লীতে শতাধিক শিশু-কিশোর রয়েছে। এদের বাবা-মা’র মূর্খতা ও দারিদ্রতার কারণে এসব শিশু-কিশোর ছেলে-মেয়েরাও শিক্ষার আলো’র মুখ দেখেতে পাচ্ছে না। যে বয়সে তাদের বই-খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সে বয়সে জীবিকার তারণায় বাবা-মা’র সাথে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে আয়-রোজগার করতে হচ্ছে। সারাদিন ঘুরে ১শ’ থেকে দেড়শ টাকা পেলে তা দিয়ে সংসার চালাতে ওই ছেলে-মেয়েদের উপার্জিত টাকা সংসারে যোগান দিচ্ছে। এতে পরিবারের কিছুটা রুটি-রুজির পথ সুগম হয়। তাই তাদের ছেলে- মেয়েদেরকে স্কুলে না পাঠিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজে নিয়োজিত করে। সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা গেছে, শতাধিক শিশু-কিশোরের মধ্যে ৮ থেকে ১০ জন শিশু স্কুলে যায়। এই স্কুলে ৮/১০ জন ছেলে-মেয়ে স্কুলের ফাঁকে ফাঁকে পরিবারের নানা কাজে জড়িয়ে থাকে। বাকিরা সবাই ২য় ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে ইচ্ছা থাকার সত্ত্বেও বাবা-মায়ের আর্থিক অভাবের কারণে ঝড়ে পড়ছে। তাই এই বেদে পল্লীর শিশু-কিশোররা উচ্চ শিক্ষার সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যায় না। এছাড়াও শিক্ষার হার বৃদ্ধির কোন সম্ভাবনা বেদে পল্লীর পরিবারদের শিশু-কিশোরদের নেই। এসব শিশু-কিশোররা অনেকেই পুষ্টিহীনতায় ভোগছে। বেদে সর্দার মাসুদ রানা জানান, সরকারি সহায়তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাদের অস্বচ্ছল পরিবার গুলোর দিকে খাদ্য নিরাপত্তা এবং শিক্ষার আনুসাঙ্গিক সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে আমাদের শিশু-কিশোররা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত হতো না। সর্দার আরও জানান, প্রতিদিন রোজগার করে দিনপাত চালাতেই কষ্ট হয়, তারপর ছেলে-মেয়েদেরকে স্কুলে পাঠানো বাড়তি খরচ যোগাতে মোটেও সম্ভব না। সম্পাদনা : তারেক