গণরোষানলে রাজউকের কর্মকর্তারা দুদকের গণশুনানিতে উঠে এসেছে ঘুষ, দুর্নীতি অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দসহ নানা অনিয়ম
এস. ইসলাম জয়: দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে কাজ করে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্সে আনতে এখন নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে দুদক। যেসব প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিতে জর্জরিত অথবা সাধারণ মানুষের ভোগান্তি তুঙ্গে সেসব প্রতিষ্ঠানে একের পর এক গণশুনানির আয়োজন করছে দুদক। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জনগণের মুখোমুখি করা হয় দুদকের পক্ষ থেকে। গতকাল বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উদ্যোগে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর সেবা সম্পর্কিত বিষয়ের উপর ফলোআপ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজউকের কর্মকর্তাদের নিয়ে গণশুনানির আয়োজন করে। এতে গণরেষানলে পরে রাজউকের কর্মকর্তারা। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ ঘুষ গ্রহণ, দুনীতি, অবৈধভাবে প্লট বরাদ্দসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছে। এ শুনানিতে প্রায় শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ে দুদকের কাছে। সেবা গ্রহণকারীরা বলেন রাজউকে কোনো সেবার জন্য এলে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না এখানে। মনির নামে একজন অভিযোগ করে বলেন, রাজউকের কর্মচারী বদরুল ভুয়া দলিল করে তার জমি নিয়েছে। রাজউকের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ করলে দুদকের কাছে বলেন ১৫ দিনের মধ্যে তার অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হবে। সাবেক পুলিশের ডিআইজি মো. কুতুবুর রহমান বলেন, উত্তরা ৯নং সেক্টরে আমার প্লট রাজউক অনুমোদিত ইমারত নির্মাণ নকশা অনুযায়ী নির্মাণপূবক বাস করি কিন্তু সেখানে নকশা বহির্ভূত আতাউর রমান নামে এক বাড়ি করলে রাস্তা সমস্যা দেখা দেয়। এ অভিযোগ করলে এর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি রাজউক। পরে দুদকের কমিশনার আজ তাকে রাজউকের অথরাইজাড অফিসার-২ এর সঙ্গে দেখা করতে বলেন।
দুদকের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসিরউদ্দীন আহমেদ বলেন, আজকের এই ফলোআপ গণশুনানি আরও ফলপ্রসূ হওয়া উচিত ছিল। রাজউককে কাজের মাধ্যমেই জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তি পর্যায়ের কার্যক্রমকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহি করতে হবে। রাজউকের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য তথ্য অধিকার আইন তথা তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। রাজউকের ওয়েব সাইটে সব তথ্য থাকা উচিত। তাহলে অনেক সমস্যার সমাধন হবে। আমরা অনেক সময় জানতে পারি রাজউক কর্মকর্তারা সেবা গ্রহীতার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এটা কাক্সিক্ষত নয়। সংবিধান অনুযায়ী জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। তারাই প্রিন্সিপাল, সরকারি কর্মকর্তারা এজেন্ট মাত্র। তাই সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করবেন এবং আইন মেনে তাদের সমস্যার সমাধান করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা যদি সুনির্দিষ্ট তথ্য পাই এবং তাতে দুর্নীতির উপদান থাকে তাহলে আমরা প্রত্যেকটি অভিযোগ একটি একটি করে অনুসন্ধান করব। আমরা শুধু প্রতিরোধের জন্য নয়, দুর্নীতি দমনও করব। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম