তাইওয়ানকে গুটি বানিয়ে চীনের সঙ্গে দাবা খেলছেন ট্রাম্প?
নূসরাত জাহান: ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ইস্যু বড় হয়ে ওঠে। এমনকী বেইজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়েও নানা সংশয় দেখা দেয়। এই যখন পরিস্থিতি তখন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প। ফলে চীনের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন আরও বাড়ল। এরই মধ্যে ‘এক চীন নীতি’ নিয়ে কথা বলেছেন ট্রাম্প। ২ ডিসেম্বর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে ফক্স নিউজকে দেওয়া সাাৎকারে ট্রাম্প ‘এক চীন’ নীতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে চীন স্পষ্ট করেই বলেছে, এক চীন নীতিÑ মার্কিন সম্পর্কের ভিত্তি। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি নাটকীয় মোড় নিতে যাচ্ছে বলেও আভাস দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ৪৪ বছরের কূটনীতিক সম্পর্ক বদল হতে পারে। ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এক চীন নীতি বুঝতে পারি। তবে আমি ঠিক বুঝতে পারি না চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বা অন্যান্য প্রশ্নে চুক্তিই না করে কেন আমরা তাদের এই নীতি সমর্থন করব। এর প্রয়োজনটাই বা কী?’
জবাবে চীন জানিয়েছে, ‘এক চীন নীতি’কে দ্বিপীয় বাণিজ্যিক কিংবা নিরাপত্তাজনিত সম্পর্ক নিয়ে দর কষাকষির েেত্র ব্যবহার করতে চাইলে তারা কোনোভাবেই মানবে না।
এক চীন নীতি অনুযায়ী তাইওয়ানকে অখ- চীনের অংশ মনে করা হয়। ১৯৭২ সালে মাও সে তুং-এর এক চীন নীতির প্রতি সমর্থন জানান তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন। এরপর আর কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেননি। সেই ‘এক চীন নীতি’র প্রতি ৪৪ বছরের মার্কিন সমর্থন প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প।
এক চীন নীতি নিয়ে ট্রাম্পের এমন মন্তব্যে বিশ্লেষকরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নতুন প্রেসিডেন্ট ঠিকমতো পররাষ্ট্রনীতি বোঝে না। তিনি দুই দেশের দ্বিপীয় সম্পর্কের কথা না ভেবে শুধুই বাণিজ্যের কথা ভাবছেন।
ট্রাম্পের এই পদপে তাইওয়ানের জন্য ঝুঁকি নাকি নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। তাইওয়ানের মনেও একই প্রশ্ন। কারণ গত এক শতাব্দী ধরেই তাইওয়ানে স্বায়ত্তশাসন চলছে। তবে পুরোপুরি স্বাধীন নয় তাইওয়ান। গত চার দশকে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেননি। ট্রাম্পই প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি প্রথা ভেঙে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট টিসাই ইং ওয়েনের সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া তার শপথ অনুষ্ঠানের যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারের সময় পররাষ্ট্র নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। প্রথা ভেঙে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনা তারই ইঙ্গিত দিলেন। তবে এটা চীন নাকি তাইওয়ানের জন্য অশনি সংকেত তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশ্লেষকদের মতে, ওয়াশিংটনের কাছাকাছি আসার তাইপের এ সুযোগ অবশ্যই বন্ধ করার চেষ্টা করবে বেইজিং। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করার চেষ্টাও করবে। সূত্র: বিবিসি। এফএ। সম্পাদনা: হাসিবুল ফারুক চৌধুরী